স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলা সাহিত্যের অন্যতম কবি আল মাহমুদের প্রথম জানাজা জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্পন্ন হয়েছে। আজ শনিবার দুপুর ১২:৪৫ সময় অনুষ্ঠিত এই জানাজায় কবি, সাহিত্যিক, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেয়।
দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে জড়িত থাকা কবির মরদেহ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একটি লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে করে জাতীয় প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর সেখানে জাতীয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়। এর পরই অনুষ্ঠিত হয় জানাজা। এর পর লাশবাহী এম্বুলেন্স নিয়ে যাওয়া হয় বায়তুল মোকারমে। সেখানে বাদ যোহর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
জানাজায় ইমামতী করেন আল্লামা শাহ আতাউল্লাহ হাফেজ্জী। জানাজায় দেশের বিশিষ্টজনসহ হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
জানাজা উপলক্ষে বাইতুল মোকাররমের মূল মসজিদ, উত্তর, দক্ষিণ ও পূর্ব গেইট প্রাঙ্গণ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
জানাজায় অংশগ্রহণ করেন, সাবেক বিচারপতি মুহাম্মাদ আবদুর রউফ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মোস্তফা জামান আব্বাসী, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল ডাক্তার শফিকুল ইসলাম, ইনসাফের উপদেষ্টা সম্পাদক মাওলানা মুসা বিন ইজহার, কবি মাহমুদুল হাসান নেজামী, শামীম সাঈদী, ঢাকা মহানগর উত্তর জামায়াতের আমীর সেলিম উদ্দীন, ইনসাফ সম্পাদক মাহফুজ খন্দকার, মুফতী ইমরানুল বারী সিরাজী, লেবারপার্টি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, সাবেক শিবির সভাপতী ইয়াছিন আরাফাত,কিশোরকন্ঠের ঢাকা মহানগরীর সাবেক পরিচালক শাহিন আহমদ খাঁন প্রমুখ।
কবি আল মাহমুদ গতকাল শুক্রবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) রাত ১১টার পর বার্ধক্যজনিত কারণে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর।
আল মাহমুদ ভর্তি ছিলেন ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালে। নিউমোনিয়াসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি পর কবিকে ৯ ফেব্রুয়ারি প্রথমে সিসিইউতে নেওয়া হয়। এরপর অবস্থার অবনতি হলে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তাঁকে আইসিইউতে নেওয়া হয়। তিনি ওই হাসপাতালের নিউরোলজি বিশেষজ্ঞ ডা. আব্দুল হাইয়ের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, কবির নিউমোনিয়া বৃহস্পতিবার থেকে বেড়ে গিয়েছিল। শুক্রবার সকাল থেকে নতুন করে প্রেসার কমে যেতে শুরু করে। তবে ওষুধ দিয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখা হয়।এরপর রাতে হঠাৎ করে হৃদপিন্ড ঠিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয়। তখন রক্তচাপ কমে যেতে থাকে। এতে মস্তিষ্কসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন না পৌঁছালে মানুষ ক্লিনিক্যালি মারা যায়। কবির বেলাতেও সেটাই হয়েছে।
আল মাহমুদ শুধু আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি নন, তিনি একাধারে ছিলেন ঔপন্যাসিক, প্রাবন্ধিক, ছোটগল্প লেখক, শিশুসাহিত্যিক ও সাংবাদিক।
কবি আল মাহমুদের প্রকৃত নাম মীর আবদুস শুকুর আল মাহমুদ। ১৯৩৬ সালের ১১ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মোড়াইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আল মাহমুদ।
সাহিত্যে অবদানের জন্য রাষ্ট্রীয় সম্মান একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ফিলিপস সাহিত্য পুরস্কার, শিশু একাডেমি (অগ্রণী ব্যাংক) পুরস্কার, ফরুখ স্মৃতি পুরস্কার, জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি পুরস্কারসহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন এই কবি। লোক লোকান্তর (১৯৬৩), কালের কলস (১৯৬৬), সোনালী কাবিন (১৯৬৬) ইত্যাদি আল মাহমুদের উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ।
Post Views:
0