কমলগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
মৌলভীবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত এলাকা কমলগঞ্জের ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের চাম্পারায়-হামহাম রাস্তা। এ সড়ক ব্যবহার করে প্রতিদিন দেশী বিদেশী প্রচুর পর্যটক হামহাম জলপ্রপাতে যাতায়াত করে থাকেন। শুষ্ক মৌসুমে এই কাঁচা রাস্তায় যাতায়াতে কোন সমস্যা না হলেও বৃষ্টির সময় সড়কটি যানবাহন চলাচল এমনকি পায়ে হেঁটে চলাচলও কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ে। পর্যটকদের কথা চিন্তা করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর চাম্পরায় চা বাগান থেকে-কলাবন বস্তি পর্যন্ত ১৮৫০ মিটার কাঁচা রাস্তা পাকাকরণের উদ্যোগ নেয়। রাস্তাটির পাকাকরণের কাজ শুরু হলেও অনেকাংশে পরিত্যক্ত নরম ইটের খোয়া দিয়ে উন্নয়ন কাজ শুরু করা হয়। স্থানীয়ভাবে অভিযোগ উঠলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর কমলগঞ্জ থেকে ঠিকাদারকে পরিত্যক্ত নরম ইটের খোয়া পরিবর্তন করে সিডিউলমত ইটের খোয়া ব্যবহারের নির্দেশ দেওয়া হলেও সে নির্দেশনা মানছেন না ঠিকাদার। জানা যায়, ঠিকাদারের লোকজন নরম পরিত্যক্ত ইটের খোয়া ব্যবহার করছেন এ রাস্তার উন্নয়ন কাজে। ঘটনাস্থল এলাকার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন চা শ্রমিক জানান, এলাকাটি দূর্গম ও উপজেলা সদর থেকে অনেক দূরে। এ এলাকার খবর কেউ রাখতে চায় না। তবে প্রায় ১০/১২ বছর আগে এ এলাকার অদূরে কুরমা সংরক্ষিত গভীর অরণ্যে হামহাম জলপ্রপাত আবিষ্কৃত হওয়ার পর থেকে এ রাস্তা ব্যবহার শুরু করে দেশী বিদেশী পর্যটকরা। এমনকি জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের লোকজনও এ রাস্তা ব্যবহার করে হামহাম জলপ্রপাত পরিদর্শনে যেতে গিয়ে এ রাস্তার উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। সরকারী উদ্যোগে কমলগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে চাম্পারায় চা বাগান থেকে কলাবন বস্তি পর্যন্ত ১৮৫০ মিটার কাঁচা রাস্তা পাকা করণের দরপত্র আহ্বান করে ২০১৭ সালের শেষ দিকে কাজ শুরু হয়। এর প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ২২ লাখ টাকা। আর এ কাজের দায়িত্ব পায় হাসান এন্টারপ্রাইজ। তবে হাসান এন্টরপ্রাইজের নামে কাজ হলেও স্থানীয়ভাবে কাজটি করছেন অন্য ঠিকাদারের লোকজন। উপজেলা সদর থেকে কমপক্ষে ২৫/৩০ কিলোমিটার দূরে কাজ হওয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কেউ এ কাজটি তদারকি করছেন না। ফলে ঠিকাদারের লোকজন সিডিউল না মেনে পরিত্যক্ত নরম ইটের খোয়া ব্যবহার করছেন রাস্তা পাকাকরণে। স্থানীয়ভাবে মৌখিকভাবে অভিযোগ শুনে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর পরিত্যক্ত নরম ইটের খোয়া পরিবর্তন করে সিডিউল অনুযায়ী ইটের খোয়া ব্যবহারে ঠিকাদারী সংস্থাকে নির্দেশনা দিলেও বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত এ নির্দেশনা মানছেন না ঠিকাদার। ঠিকাদারী সংস্থা হাসান এন্টারপ্রাইজের মালিক মাহবুবুর রহমান ওরফে জয়নালের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আসলে কাজটি হয়েছে তার প্রতিষ্ঠানের নামে। তবে মূলত কাজটি করছেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক রফিকুর রহমানের লোকজন। পরিত্যক্ত নরম ইটের খোয়া ব্যবহারের সত্যতা স্বীকার করে মুহিবুর রহমান আরও বলেন, কাজটি একজন জনপ্রতিনিধি ও সকলের স্যার করছেন। এ বিষয়ে নাক না গলানোই ভাল। কমলগঞ্জ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী মামুন ভূঁইয়া বলেন, পরিত্যক্ত ও নরম ইটের খোয়া পরিবর্তনের জন্য ঠিকাদারী সংস্থাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
কমলগঞ্জের চাম্পারায়-হামহাম রাস্তা পরিত্যক্ত ইটের খোয়া দিয়ে কাজ চলছে
