ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার ভুজবল গ্রামের ফয়েজ আহমদ তালুকদারের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় দীর্ঘ ১ বছর ধরে নানা ভাবে হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন একই গ্রামের নাছিমা আক্তার নামের এক গূহবধূ। ফয়েজের অত্যাচারে ইতি মধ্যে তার কলেজ পড়–য়া মেয়ে ফাতেমা বেগম এবং মাদ্রাসা পড়–য়া ছেলে জাবের ও নাবিল ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছেন না। বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান খায়রুল মজিদ (ছালেক) ও ইউপি সদস্য মইন উদ্দিন চৌধুরী ৪ বার সালিশে বসে ব্যর্থ হয়েছেন। সর্বশেষ ১৪ জানুয়ারী ভোক্তভোগী মহিলা নিরূপায় হয়ে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ জালাল বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগ থেকে জানা যায়, বিগত বছরের ১২ এপ্রিল ফয়েজ আহমদ তালুকদার গৃহবধূ নাছিমাকে শারীরিক ভাবে লাঞ্চিত করার জন্য একাধিকবার কুপ্রস্তাব দেয়। নাছিমা ওই কুপ্রাস্তাবে রাজি না হওয়ায় পরিকল্পিত ভাবে জমি সংক্রান্ত বিরোধ সৃষ্টি করেন। জমি ও অন্যান্য বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান খায়রুল মজিদ (ছালেক) ও ইউপি সদস্য মইন উদ্দিন চৌধুরী ২ বার বাড়িতে এবং ২ বার ইউনিয়ন কার্যালয়ে সালিশে বসে বিষয়টি নিষ্পত্তির চেষ্টা করে ফয়েজের অসযোগীতার কারনে ব্যর্থ হন। বিচার না মেনে নাছিমাকে হয়রানি করার জন্য ফয়েজ গোপনে মৌলভীবাজার আদালতে মামলা দায়ের করেন (প্রসেস নং-৬৫(৬)। সর্বশেষ ১ জানুয়ারী ফয়েজ আহমদ তার সহযোগীদের নিয়ে নাছিমার বাড়িতে যাতায়াতের রাস্তায় বেড়া দেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত বেড়াটি বৃদ্ধমান রয়েছে। রাস্তায় বেড়া দেয়ার খবর পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে গিয়ে বেড়ার তুলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন। এদিকে ১০ জানুয়ারী ফয়েজ মাঠ থেকে নাছিমার একটি গরু তার বাড়িতে নিয়ে যান। পরবর্তীতে কয়েকজন প্রতিবেশীর সহযোগীতায় নাছিমা গরুটি ফিরে পান।
অভিযোগে তিনি আরোও বলেন, তার স্বামী ছাতির আলীর একটি সিএনজি গাড়ি আছে। এটার আয় দিয়েই তাদের পরিবারের ও ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চলে। এটাই তাদের একমাত্র সম্ভল। কিন্তু ওই গাড়িটি ভাঙচুর করার জন্য ফয়েজ একাধিকবার চেষ্টা করে। এমনকি রাতের বেলা ফয়েজ তার সহযোগীদের নিয়ে নাছিমার ঘরে ডিল মারে এবং দিনের বেলা বাড়ি থেকে গাছ এবং বাঁশ কেটে নিয়ে যায়। ফয়েজের অসযোগীতার কারনে তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারছেন না মর্মে উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেওয়ান খায়রুল মজিদ (ছালেক) ২ বার লিখিত প্রত্যয়ন পত্র দিয়েছেন।
এবিষয়ে রাজনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান দেওয়ান খায়রুল মজিদ (ছালেক) অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পঞ্চায়েতের মুরব্বিদের নিয়ে একাধিকবার চেষ্টা করে ফয়েজ আহমদের একগুয়েমির কারনে সম্ভব হয়নি।
ইউপি সদস্য মইন উদ্দিন চৌধুরী বলেন, নাছিমা আক্তার আর্থিক ভাবে দুর্বল থাকায় বিভিন্ন সময় ফয়েজ আহমদ এর ধারা হয়রানির স্বীকার হয়েছে এবং উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ বসেও বিষয়টি সমাধান করতে পারেননি।
ফয়েজ আহমদ তালুকদার বলেন, নাছিমা আক্তার কয়েক বছর আগে আমার কিছু জায়গা জবর দখল করে নেন। পরবর্তীতে উপজেলার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সালিশের মধ্যেমে ওই জায়গাটুকু আমি ফেরত পাই। জায়গা ফেরত পাওয়ার ৩ মাসের মাথায় আমাকে প্রস্তাব দেয়া হয় ওই জায়গাটুকু নাছিমা আক্তারের কাছে বিক্রি করার জন্য। কিন্তু আমি রাজি না হওয়ায় নাছিমা আক্তার নারী নির্যাতন মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানির হুমকিদেন।
Post Views:
0