স্টাফ রিপোর্টার:
মৌলভীবাজার জনশক্তি ও কর্মসংস্থান রফতানি অফিসে ফিঙ্গার প্রিন্টের নামে বিদেশগামীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫০০/৬০০ টাকা ঘুষ আদায় করা হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষ আরোও বেশি টাকা আদায়েরও অভিযোগ রয়েছে। এনিয়ে বিদেশগামীদের সাথে অফিস স্টাফদের একাধিকবার বাকবিতন্ডাও হয়। কিন্তু অবস্থার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
অভিযোগ রয়েছে টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে নানাভাবে হয়রানি স্বীকার হন তারা। অবশেষে সংজ্ঞবদ্ধ চক্রের কাছে জিম্মী হয়ে ঘুষ দিয়েই ফিঙ্গার প্রিন্ট দিচ্ছেন। এবিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোনো কাজ হয়নি। কর্তৃপক্ষ দেখেও না দেখার বান করছেন।
জানা যায়, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলার বিদেশগামীদের ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়ার জন্য মৌলভীবাজার অঞ্চলিক অফিস স্থাপন করা হয়। মৌলভীবাজারে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সিলেট জনশক্তি অফিসের প্রধান আতাউর রহমান। কিন্তু আতাউর রহমান সিলেট থাকায় ওই অফিস পরিচালনা করেন জেলা জনশক্তি জরিপ কর্মকর্তা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান। দুই জেলা মিলে গড়ে প্রতিদিন ওই অফিসে ২০০/২৫০ জন লোক ফিঙ্গার প্রিন্ট দিতে আসেন। এর মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ হত দরিদ্র ও নি¤œ আয়ের লোক। ফিঙ্গার প্রিন্টের জন্য সরকার নির্ধারিত ফি ২০০ টাকার সাথে ভ্যাট ২০ টাকা জমা দিতে হয় ব্যাংকে। অথচ অফিস পিয়ন নবীর নেতৃত্বে একটি চক্র প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের ভ্যাটসহ ২২০ টাকার রশিদ দিয়ে তাদের কাছ থেকে ৫০০/৬০০ টাকা আদায় করছে। টাকা না দিলে কর্মকর্তার অনুপস্থিতি, সার্ভার সমস্যাসহ নানা অজুহাত দেখিয়ে ফিঙ্গার প্রিন্ট নেয়া হয় না।
সরেজমিন প্রতিবেদক শহরের মৌলভীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বড়হাট রাজা কমপ্লেক্সে অবস্থিত জেলা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান অফিসে গেলে কথা হয় সদর উপজেলার কাগাবালা গ্রামের সাহেল মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, ২২০ টাকার ফরম এখান থেকে ৪৫০ টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে এবং ফিঙ্গারের জন্য তাদের ঘুষ ২০০ টাকা দিয়েছি। হবিগঞ্জ সদর থেকে আসা আলতা বানু নামের এক মহিলার কাছ থেকে একই ভাবে বাড়তি টাকা আদায় করা হয়। জেলার কুলাউড়া উপজেলার ভুকশিমইল ইউনিয়নের জাবেদ মিয়া নামের এক কাতার প্রবাসী প্রতিবেদককে বলেন, ঘুষের টাকা না দেয়ায় তার ফিঙ্গার নেয়া হয়নি। পরবর্তীতে অনেক দেনদরবার করলে অফিস পিয়ন নবী ফিঙ্গার নিলেও এটা অফিসের কম্পিউটারে সংরক্ষিত করে রাখেননি। ওই দিন বিকেলে ওই লোক স্থানীয় এক সরকার দলীয় রাজনীতিবীদ দিয়ে ফোন করালে বলা হয় সার্ভারে সমস্যা থাকায় তাদের ফিঙ্গার নেয়া সম্ভব হয়নি। এখন পাঠিয়ে দেন তাহলে নেয়া যাবে। একই অভিযোগ করেন বড়লেখা, জুড়ী, রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলা থেকে আসা অনেক বিদেশগামী।
এ বিষয়ে জেলা জনশক্তি জরিপ কর্মকর্তা মোঃ সিদ্দিকুর রহমান কোনো মন্তব্য না করে বলেন, “সোমবার অথবা মঙ্গলবারের দিকে অফিসে আসেন। তাহলে বসে বিস্তারিত কথা বলব।
বিদেশগামীদের ফিঙ্গার প্রিন্টে ঘুষ আদায়
