কুলাউড়া প্রতিনিধি:
আর মাত্র ২ মিনিট পরে আমি চিরদিনের জন্য চলে যাচ্ছি। তুমি সুখে থাকিও। বলেই মোবাইল ফোন কলে স্ত্রীকে রেখে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দেন স্বামী। কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে ৩-৪ মিনিট পরেই স্ত্রী আবার ফোন করেন স্বামীর মোবাইলে। জানতে চান তার স্বামী কোথায়? ততক্ষণে স্বামীর দেহের উপর দিয়ে চলে গেছে দ্রুতগামী ট্রেন। রেললাইনের ভেতর বাইরে পড়ে ছিলো খন্ডবিখন্ড দেহ। স্বামীর এই নির্মম পরিণতি শুনে মোবাইলের অপরপ্রান্তে থাকা স্ত্রীও মুর্চা যান।
বৃহস্পতিবার ২০ ডিসেম্বর বিকালে এমন মর্মান্তিক ঘটনাটি কুলাউড়া পৌরসভার বিহালা এলাকার ট্রেন লাইনে ঘটনাটি ঘটে বলে কুলাউড়া রেলওয়ে থানা সুত্র জানায়। ট্রেনে কাটা পড়ে মারা যাওয়া ভুলন দাস (৩২) নামক যুবক সিলেট থেকে ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ঝাঁপিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেন।
মোবাইল নাম্বারের সুত্র ধরে রেলওয়ে পুলিশ পরিবারের লোকজনের কাছে খবর দেয়। সন্ধ্যা ৭টায় নিহতের লাশ উদ্ধার করে কুলাউড়া রেলওয়ে থানায় নিয়ে আসে। ২১ ডিসেম্বর সকালে নিহত ভুলনের স্ত্রী জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে আসলে ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করে রেলওয়ে পুলিশ।
রেলওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল মালেক জানান, পারিবারিক কলহের জের ধরে আত্মহত্যার ঘটনাটি ঘটেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। তিনি আরও জানান, ট্রেন লম্বা হুইছেল বাজালেও ভুলন দাস রেললাইন থেকে সরেননি। লাইনের পাশে চাদরের উপরে নিজের মোবাইল ও সাথে থাকা টাকা আলগা করে রাখা ছিলো বলে স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
সিলেট জেলার বিয়ানী বাজার উপজেলার বাসিন্দা মৃত খোকন দাসের পুত্র ভুলন দাস। তিনি পেশায় একজন পল্লীচিকিৎসক। বর্তমানে বিয়ানী বাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের দুবাগ বাজারে ডর্ক্টস চেম্বার নামে তার একটি নিজস্ব ফার্মেসী রয়েছে। যেখানে বসে তিনি রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতেন। বিয়ে করেছেন বছর দুয়েক আগে। স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ভুলন দাস ৪-৫ বছর আগে বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ বাজারে আহমদ ফার্মেসী ও কুলাউড়া উপজেলার সুরমা ফার্মেসীতে ফার্মাসিস্ট হিসেবে কাজ করেছেন।
কুলাউড়ায় স্ত্রীকে মোবাইল ফোন কলে রেখে ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিলেন স্বামী!
