কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু সোনালী ফসলে ভরপুর। মাঠে মাঠে কৃষকদের দিগন্ত বিস্তৃত সোনালী ফসলে প্রকৃতির নিয়মেই নবান্ন সমাগত। নবান্নের আমেজে কৃষকরা হয়ে উঠছেন উৎফুল্ল। নানা দূর্যোগ পেরিয়ে মাঠে মাঠে সোনালী ফসল কৃষকদের ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনার যোগান দিচ্ছে।
নবান্নের শুরুতে কৃষি অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কৃষকরা সোনালী ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠছেন। কমলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা ধান কাটা শুরু করেছেন। কিন্তুুু ব্যাপক উৎসাহ, উদ্দীপনা নিয়ে ধান কাটা শুরু করলেও শংসয়ের মধ্যে দিনযাপন করছেন কৃষকরা। ফসল ভালো হলেও বাজার দর কম হওয়ার কারণে খরচ ফুসিয়ে লাভের মূখ দেখা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন। ফসলি জমিতে ফসল উৎপাদনের জন্য অনেক টাকা ধারদেনা করে এখন ফসল বিক্রি করে ঠিক মত সেই টাকা পরিশোধ করতে পারবেন কিনা সেই চিন্তায় রয়েছেন কৃষকরা।
কৃষক কাজল মালাকার জানান, এবার জমিত ভালো ধান হইছে। কিন্তু বাজারও ধানর দাম একেকবারে কম। ধানের মণ ৪৫০-৫০০ টাকা করি চলের। ধান ভালা হওযায় মনও করছিলাম যে টাকা মাইনষর কাছ থাকি ধার করি আনছিলাম এগুন ভালা করি দিয়া সংসারওর লাগি কিছু রাখতাম পারমু, কিন্তু ওখন চিন্তাত আছি কেমনে যে কিতা করতাম। ভালা ধান পাইয়াও ধানর দামর লাগি ওখন বেশি চিন্তাত আছি।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় মোট ১৭ হাজার ৩ শত হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক বিভিন্ন দূর্যোগের পরও ফসল ভালো হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষকরাও উৎফুল্ল মনে নবান্ন উৎসবের অংশ হিসাবে উপজেলার শমশেরনগর, পতনঊষার সহ বিভিন্ন স্থানে ফসল তোলা শুরু করেছেন। শমশেরনগর ইউনিয়নের কয়েকটি এলাকা ঘুরে ধান কাটার চিত্র চোখে পড়ে। মরাজানের পার গ্রামের কৃষক হাফিজ মো. মনিরুদ্দীন এক কিয়ার জমিতে ব্রি-৪৯ জাতের ধান কাটা শুরু করেন। হাফিজ মো. মনিরুদ্দীন বলেন, এবার মাঠে সোনালী ফসলে নতুন রূপ ধারণ করেছে। এক কিয়ার জমির ধান কেটে এগুলো বীজ হিসাবে রাখার চেষ্টা করছি। এই এক কিয়ার জমিতে ১৬ থেকে ১৭ মণ ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমার প্রায় ১৮ কিয়ার জমিতে ফসল ভালো হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রঘুনাথ নাহা এ প্রতিনিধিকে বলেন, উপজেলায় বিচ্ছিন্নভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের সার্বিক নজরদারিতে এবছর ফসল ভালো হয়েছে এবং বাম্পার ফলনও হবে। তাই কৃষকরাও খুশি বলে তিনি দাবি করেন।