কুলাউড়া প্রতিনিধি:
কুলাউড়ায় ফানাই নদীর রেল ব্রীজের পাশের রেললাইনে ট্রেনে কাটা পড়ে একটি মেছো বাঘ মারা গেছে। ধারণা করা হচ্ছে ১৮ নভেম্বর রোববার রাতের কোন ট্রেনের ধাক্কায় মেছে বাঘটির মৃত্যু হয়েছে। এদিকে গত ১৩ অক্টোবর বরমচাল ইউনিয়নের খাদিমপাড়া এলাকায় ট্রেনে কাটা পড়ে একটি মেছো বাঘ মারা যায়। এরপর গত ০৭ নভেম্বর ভাটেরা ইউনিয়নের কোনাগাঁও গ্রামে এবং সর্বশেষ গত ১০ নভেম্বর রাতে ভূকশিমইল ইউনিয়নে বাদে ভুকশিমইল গ্রামে আরেকটি মেছো বাঘকে পিটিয়ে হত্যা করে গ্রামবাসী। ফলে এনিয়ে কুলাউড়ায় ৪ টি মেছো বাঘের মৃত্যু হলো।
১০ অক্টোবর উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের রফিনগর গ্রামের স্কুল শিক্ষক আবদুর রহমান চৌধুরী তাদের পঞ্চায়েতি মসজিদে এশার নামাজ আদায় করে বাড়ি ফেরার পথে মেছো বাঘের আক্রমণের শিকার হন। বাঘ তার মুখমন্ডলে আঘাত করে মুখের মাংসের একটি অংশ নিয়ে যায়। তাকে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে ১৫ দিন চিকিৎসারত অবস্থায় ৩১ অক্টোবর বুধবার তার মৃত্যু হয়। এরপর থেকে হাওর তীরবর্তী গোটা বরমচাল ইউনিয়নে বাঘ আতঙ্ক দেখা দেয়।
ইউনিয়নের মহলাল, আকিলপুর, ইসলামাবাদ, দক্ষিণ ইসলামাবাদ, চন্দ্রখলা, উজানপাড়া, খাদিমনগর, সিংগুর, পশ্চিম সিংগুর ও বালিয়ারগড় এলাকার মানুষ মধ্যে মাঘ আতংক বিরাজ করছে। এসব গ্রামের মানুষ স্থানীয় হাটবাজারে গেলেও সন্ধ্যার আগেই বাঘ আতঙ্কে বাড়ি ঘরে ফেরেন এবং সন্ধ্যা নামলেই বাড়িঘরে অনেকটা অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
পরিবেশবাদি সংগঠন সিএনআরএসের ক্রেল প্রকল্পের কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান জানান, হাওরের সোয়াম ফরেস্টে অনেক মেছোবাঘ ও বনবিড়াল রয়েছে। অনেকসময় খাবারের সন্ধানে সেগুলো লোকালয়ে বেরিয়ে পড়ে। মানুষকে দেখলে নিজেদের আত্মরক্ষার্থে ভয় কিংবা আছড় মারতে পারে। সেজন্য এসব বন্য প্রাণীকে নির্বিচারে মেরে ফেলা উচিত হবেনা। তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য বিনষ্ট হবে। হুমকির মুখে পড়বে এসব বন্য প্রাণী বা জীববৈচিত্র্য।