স্টাফ রিপোর্টার:
মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষক না থাকায় এবং কলেজের চাহিদা অনুযায়ী শিক্ষকদের পদ সৃষ্টি না হওয়ায় গত কয়েক বছর ধরে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান। যার ফলে কলেজ থেকে আশানুরূপ ফলাফল পাওয়া যাচ্ছেনা। এদিকে অভিযোগ রয়েছে কয়েকটি বিভাগের কিছু সংখ্যক শিক্ষক মাসে একাধিক দিন ক্লাসে অনুপস্থিত থাকায় নির্দিষ্ট সময়ে সিলেবাস শেষ করতে পারেননি। এনিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অধ্যক্ষ ড. ফজলুল আলী চলতি বছরের জানুয়ারীতে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আন্তরিকতার সহিত কাজ করে নানা সংকটের কারণে তিনি ঐতিহ্যবাহী ওই কলেজকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে পারছেন না। সংকট সমাধানে ইতি মধ্যে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহযোগীতা কামনা করছেন।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, জেলার প্রাচীন এই বিদ্যাপীঠে বর্তমানে প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। কলেজে ১৪ টি বিষয়ে ¯œাতক এবং ১ম পর্ব নিয়মীত ৩টি ও শেষ পর্ব ১২টি বিষয়ে ¯œাতকোত্তর কোর্স চালু আছে। কলেজে ৮৪টি পদের মধ্যে বর্তমানে ১৫টি পদ শূন্য রয়েছে। এর মধ্যে বাংলা বিভাগে প্রভাষকের ২টি, ইংরেজি বিভাগে সহকারী অধ্যাপকের ২টি, অর্থনীতি বিভাগে সহকারী অধ্যাপকের ১টি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষকের ১টি, দর্শন বিভাগে প্রভাষকের ১টি ও সহকারী অধ্যাপকের ১টি, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগে প্রভাষকের ১টি ও সহকারী অধ্যাপকের ১টি, হিসাববিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষকের ১টি ও সহকারী অধ্যাপকের ১টি, পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রদর্শকের ১টি ও উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের প্রদর্শকের ১টি পদ শূন্য রয়েছে। এদিকে আইসিটি বিষয়ে ১টি মাত্র পদ রয়েছে। অথচ এটাও খালি। কিন্তু আইসিটি একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণীর আবশ্যিক বিষয়। শিক্ষক সংকটের পাশাপাশি কলেজে অবকাঠামোগত সংকট রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানায়, যেখানে ৭৬টি শ্রেণী কক্ষ প্রয়োজন, সেখানে মাত্র ২৯টি আছে। এছাড়া স্বতন্ত্র পাঠাগার ভবন না থাকায় একটি কক্ষে লাইব্রেরীর কার্যক্রম চলছে। ১০০ আসনের ২টি ছাত্রীনিবাসে ৩০০ ছাত্রী বসবাস করছে এবং ৬৮ আসনের একটি ১টি ছাত্রাবাসে ১০০ ছাত্র বসবাস করছে। পাশাপাশি দূরবর্তী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের চরম সমস্যা রয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মীত ক্লাসে উপস্থিত হতে পারছে না।
কলেজের শিক্ষার্থী আশরাফ, আজির উদ্দিন ও এস এম সাব্বির আলম বলেন, কলেজে আসলেও শিক্ষক সংকটের কারণে ক্লাস হয়না। যার কারনে নিয়মীত ক্লাসে আসতে ভালো লাগে না। আবার কিছু কিছু শিক্ষক ক্লাসে না এসে বাসায় কোচিং নিয়ে ব্যস্থ থাকেন।
কলেজের সার্বিক বিষয় নিয়ে অধ্যক্ষ ড. ফজলুল আলী বলেন, আন্তরিকতার সহিত কাজ করেও চতুর্মূখি সংকটের কারণে কলেজকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে শিক্ষক ও শ্রেণী কক্ষ সংকট সমাধান হলে আগামীতে আরোও ভালো ফলাফল সম্ভব।