কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর বাজারে খ্যাতনামা আইডিয়াল কেজি স্কুলের প্রবেশ গেইটের সামনে স্কুলের প্রাচীর ঘেষেই ময়লা আবর্জনা ফেলছে স্থানীয় কিছু সংখ্যক দোকানীরা। বাজার ইজারাদার ও স্কুলের আপত্তির পরও বন্ধ হচ্ছে না ময়লা আবর্জনা ফেলা। কয়েক দিনের জমে থাকা ময়লা আবর্জনার দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন এ স্কুলের ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকরা।
রোববার(৭ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, আইডিয়াল স্কুলের প্রবেশ পথের দুই দিকের সীমানা প্রাচীর ঘেষেই জমে আছে কয়েক দিনের ময়লা আবর্জনা। আবর্জনা দেখেই বোঝা যাচ্ছে মোদীর দোকান, ফার্মের মুরগীর দোকান ও চা ও ভাতের দোকানের উচ্ছিষ্ট সকল আবর্জনা খোলাভাবে প্যাকেট করে এনে এখানেই ফেলে রাখা হয়েছে। আর রাতের সময় বাজারের চলাচলকারী লোকজন এই ময়লার উপরও আবার প্রশ্রাব করে যায়। ফলে দুর্গন্ধে স্কুল সামনে ও ভিতরে বসাই যায় না।
আইডিয়াল কেজি স্কুলের শিক্ষক আব্দুস সামাদ ও সৈয়দ হারুন শিপু অভিযোগ করে বলেন, স্কুলে সামনেই বেশ কিছু মোদী দোকান, ফার্মের মুরগীর দোকান ও চা ভাতের দোকান রয়েছে। এসব দোকানীরাই রাতে স্কুল গেইটের সমানে ময়লা আবর্জনা ফেলেন। তাদরেকে দফায় দফায় ময়লা আবর্জনা স্কুলের সামনে না ফেলার জন্য বললেও তারা কারো কথাই শুনেন না। ময়লা আবর্জনায় স্কুলে সামনের পরিবেশ খারাপ থাকায় গত বছরের তুলায় এ বছর অনেক অভিভাবক তাদের ছাত্র অন্য স্কুলে নিয়ে গেছেন। শিক্ষকরা আরও বলেন, এ বিষয়টি কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবহিত করলে গত কয়েক মাসে বাজার ইজারাদার ২ বার এসব ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে দিয়েছেন। কিছু দিন পর থেকেই আবারও ময়লা আবর্জনা ফেলা শুরু হয়।
এ স্কুলের অভিভাবক শাহ আলম জুয়েল ও মজিবুর রহমান বলেন, স্কুলের সামনের কয়েকটি মোদী দোকানী, ফার্মের মুরগীর দোকানী ও চা ভাতের দোকান স্কুলের সীমানা প্রাচীর ঘেষে গেইটের সামনেই ময়লা আবর্জনা ফেলছে। স্কুলের শিক্ষকদের সাথে অভিভাবকরাও গিয়ে দোকানীদের এখানে ময়লা আবর্জনা না ফেলার জন্য বললে উল্টো দোকানীরা বলেন, তারা আবর্জনা ফেলছেন না। শমশেরনগর বাজার ইজারাদারের পক্ষে তার বড় ছেলে আবুল কালাম স্কুলের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ময়লা ফেলার দায় কেউ নিচ্ছে না বলে ইজারাদারের পক্ষে মাঝে মাঝে এ স্থান পরিষ্কার করে দেওয়া হয়। শমশেরনগর বণিক কল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুর মালিক আইডিয়াল কেজি স্কুলের সামনে ময়লা আবর্জনা ফেলার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সামনের সমূহ মোদী দোকানী, ফার্মের মুরগী দোকান ও চা ভাতের দোকানীদের সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পরিদর্শক দুলাল মিয়া মৌখিকভাবে অভিযোগ পেয়ে গতকাল রোববারই আইডিয়াল কেজি স্কুলের সামনে এসে এর সত্যতা পেয়েছেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের পরিদর্শক দুলাল মিয়া এ প্রতিনিধিকে বলেন, সংশ্লিষ্ট দোকানীদের সতর্ক করে দিয়ে ইজারাদারকে বলেছেন স্কুলের সামনের ময়লা আবর্জনা দ্রুত পরিষ্কার করে দিতে। এর পর আবার ময়লা আবর্জনা ফেললে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাহমুদুল হক আইডিয়াল কেজি স্কুলের সামনে ফেলা ময়লা আবর্জনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, শমশেরনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বলেছেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য।
শমশেরনগরে স্কুল গেইটের সামনেই ময়লা ফেলছে দোকানীরা, দুর্ভোগের শিকার ছাত্র-শিক্ষক ও অভিভাবকরা
