বিশেষ প্রতিনিধিঃ
করোনা মহামারির কারণে অনেকটা স্তবির ছিল পুরো মৌলভীবাজার জেলা। এ বছর খুব বেশি অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়নি। তবে এর মধ্যে ঘটেছে নানা ঘটনা দুর্ঘটনা। এগুলোর রেশ এখনও কেটে উঠতে পারেননি এ জেলার ২০ লক্ষ মানুষ। তবে ১৪টি আলোচিত হত্যাকান্ড কাঁদিয়েছে মৌলভীবাজারের সর্বস্থরের মানুষকে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৯ জানুয়ারি ভোরে জেলার বড়লেখা উপজেলার উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নের পাল্লাথল চা-বাগানে পারিবারিক কলহের জের ধরে নির্মল কর্মকার তার স্ত্রী জলি বুনার্জিকে দা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। জলিকে বাঁচাতে তার মা লক্ষ্মী বুনার্জি, পাশের ঘরের বসন্ত ভৌমিক, স্ত্রী কাননবালা এবং বসন্তের মেয়ে শিউলী ভৌমিক এগিয়ে এলে নির্মল তাদেরও কুপিয়ে হত্যা করে। ঘাতক নির্মল পালিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়ে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে গলায় ফাঁস দিয়ে এক পর্যায়ে আত্মহত্যা করে।
২৩ জানুয়ারী কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে শ্রীমঙ্গলে পরকীয়া সন্দেহে প্রেমিক লিটন হত্যা করে তার প্রেমিকাকে শিপাকে। পরে ০১ ফেব্রুয়ারী পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লিটনকে গ্রেফতার করে।
জুড়ী উপজেলায় ১ ফেব্রুয়ারী বদরী যাদব (৪৩) নামে এক চা শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। চা বাগানের কাছে লেবার লাইনের পাশের একটি জমি থেকে তার মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
১২ জুন জেলার রাজনগর উপজেলার উত্তরভাগ ইউপিস্থ চাঁনভাগ দক্ষিন টিলা গ্রামে জনৈক মুকুল মিয়ার আকাশী বাগানের একটি গাছ থেকে অজ্ঞাতনামা এক মহিলার (১৮-২০) ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হয়।
বাবাকে অপমানের প্রতিশোধ নিতে গত ২ জুলাই বিলাসছড়া চা বাগানের ঝোঁপের মধ্যে শিশু রিমন গড়কে হত্যা করে আব্দুল হানিফের ছেলে ইউনুছ। পরে পুলিশ ইউনুছকে গ্রেফতার করে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলায় পারিবারিক কলহের জের ধরে ২ জুলাই মাজেদা বেগম (২১) নামের সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক গৃহবধূকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। এঘটনায় পরের দিন কুলাউড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
৩১ জুলাই বড়লেখা উপজেলার আহমদপুর গ্রামের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার সাইফুর রহমানকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর ঘাতকরা তার বাড়ির মেঝেতে তাকে শুইয়ে রাখে। ঘটনাটি আড়াল করতে সাপের কামড়ে তার মৃত্যু হয় বলে ঘাতকরা প্রচার করে।
৯ নভেম্বর বেড়ানোর কথা বলে স্কুল ছাত্রী রেশমা বেগমকে তার বাড়ি থেকে মোটরবাইকে করে দেওড়াছড়া চা বাগানের ভেতরের একটি টিলায় নিয়ে যায় দিপেশ। কৌশলে পেছন থেকে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে প্রেমিক দিপেশ। হত্যার পর রেশমার লাশ টেনে নিয়ে পার্শ্ববর্তী অন্য টিলায় ফেলে দিপেশ।
কুলাউড়া পৌর শহরের ব্যবসায়ী মনাফ ১২ ডিসেম্বর রাতে নিখোঁজ হলে ১৫ ডিসেম্বর তার আপন চাচার বাড়ির সেফটিক ট্যাঙ্কের পাশের গভীর গর্ত থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে। এই হৃদয় বিদাড়ক ঘটনা কাঁদিয়েছে পুরো জেলাবাসীকে।
২৬ ডিসেম্বর মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগরে সরকারী রাস্তায় গার্ড ওয়াল নির্মাণের বিরোধে খোকা দাসের পুত্র সজল দাস খুন হন।