কুলাউড়া প্রতিনিধিঃ
কুলাউড়ার শরীফপুরের চেয়ারম্যান জুনাব আলির ভাতিজা ছাত্রদল নেতা কাওসার আহমদ মশি ও তার গংদের আসামি করে মৌলভীবাজার নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১টি নারী নির্যাতন মামলা ও ১টি অপহরন মামলা রয়েছে। পৃথক এ ২টি মামলা ছাড়াও অপহরনকৃত পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট কুলাউড়ায়ও একটি মামলা চলমান।
৩টি মামলায়ই চেয়ারম্যান জুনাব আলীর ভাতিজা ছাত্রদল নেতা কাওসারকে প্রধান আসামী করা হয়েছে। বিগত ১৯/০৬/২০ মৌলভীবাজার নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২০৯ নং মামলার ৪/৫ নং আসামীদের স্বামী প্রবাসে থাকায় তাদের সাথে ১ নং আসামি কাওসার মশি গংরা দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ মেলামেশা সহ নানা অপকর্ম করে আসছে। তাদের এসব অপকর্ম দেখে ফেলে মামলার বাদী সঞ্জরপুর গ্রামের দেলোয়ারা বেগমের ছেলে আনোয়ার হোসেন। ফলে এ থেকেই আক্রোশ ক্রমশ বাড়তে থাকে। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান জুনাব আলির ভাতিজা প্রভাব কাটিয়ে ছেলেটিকে মোবাইল চোর সাব্যস্থ করে শালিসের নাটক সাজায়। ছেলেটির বাবা ও মাকে ব্যাপক মারধর করে আহত করে। আহতদের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মৌলভীবাজার সদর ও পরবর্তীতে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করা হয়।
এরই জের ধরে বিগত ২১/০৭/২০২০ ইং আনুমানিক সন্ধ্যা সাড়ে ৭ ঘটিকায় বাদীর ছেলে আনোয়ার হোসেনকে অপহরন করে। মামলা নং (২১০ মৌলভীবাজার নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেট আদালত)। মামলার এজহার অনুযায়ী ১ নং আসামি মশি আনোয়ার হোসেনকে ডান ও বাম পায়ে পরপর ২টি বিষ জাতীয় ইনজেকশন দেয় ও ২ নং আসামি ডান ও বাম হাতের বাহুতে পরপর ২টি বিষ জাতীয় ইনজেকশন প্রয়োগের মাধ্যমে অবচেতন করে থাকে। এদিকে বাদি দেলোয়ারা বেগমের ছেলে অপহরনের পরের দিন কুলাউড়া থানায় একটি জিডি করেন (জিডি নং ১০১৪)। অতপর ২৩/০৭/২০২০ ইং তারিখে আসামিগণ বাদীর ছেলেকে অবচেতন করে শমশেরনগর রেলওয়ে ষ্টেশনে ফেলে রেখে চলে যাওয়ার পর সেখানে আনোয়ার হোসেনের এক বন্ধু তাকে বাড়িতে অবচেতন অবস্থায় নিয়ে আসলে সাথে সাথে তাকে চিকিৎসার জন্য কমলগঞ্জ সরকারী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত ডাক্তার থাকে সিলেট ওসমানিতে রেফার করেন। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত ছেলেটি চিকিৎসাধিন। এখনো তার কোমড়ের নিচ থেকে দুটি পা অবচেতন রয়েছে।
এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত মামলারবাদী ও তার পরিবার বর্গ স্থানীয় চেয়ারম্যানের ভাতিজা গংদের ভয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য ভয় ভীতি দেখাচ্ছে। ফলে ভূক্তভোগিরা নিরাপত্তার চেয়ে কুলাউড়ায় আরো একটি মামলা করেছে। মামলা গুলি বর্তমানে পিবিআই ও কুলাউড়া থানা পুলিশ তদন্ত করে ছেলেটিকে অবচেতনের সত্যতা পেয়েছে।
এবিষয়ে মামলার বাদী মুক্তিযোদ্ধার মেয়ে দেলোয়ারা বেগম বলেন, কাওসার আহমদ মশি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাতিজা থাকায় প্রায় সময় আমাদের উপর নির্যাতন করে। আমরা অসহায় থাকায় প্রতিবাদ করিনি। স্থানীয় ২ মহিলার সাথে সে নিয়মীত অবৈধভাবে মিলামেশা করে। এলাকার সবার বিষয়টি জানা রয়েছে। তার এই অবৈধ মিলামেশার বিষয়টি স্বচক্ষু থেকে আমার ছেলে দেখলে মশি আমার ছেলে আনোয়ারকে ব্যাপক মারধর করে। সর্ব শেষ আমরা অতিষ্ট হয়ে আইনের স্মরণাপন্ন হয়েছি।
অভিযুক্ত সাবেক ছাত্রদল নেতা মামলার আসামী কাওছার আহমদ (মশি) অভিযোগ গুলো অস্বীকার করে বলেন, আমার সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে। আগামী ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তারা এই মহিলাকে দিয়ে এ কাজ গুলো করছে। তিনি আরও বলেন, মামলার বাদী দেলোয়ারা বেগমের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাসহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এ মহিলা নানা অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত।
কুলাউড়ায় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাতিজার বিরুদ্ধে অপহরণ মামলা
