ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মৌলভীবাজার পৌর শহরের সোনাপুর এলাকায় মাহমুদ এইচ খান নামের এক সাংবাদিকের বাসায় তরুণীকে ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে জেলার নাগরিক সমাজ। বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের চৌমুহনী এলাকায় এ মানবন্ধনের আয়োজন করা হয়।
এ ঘটনায় ৩১ আগষ্ট মামলা হলেও এখন পর্যন্ত ধর্ষককে গ্রেফতার করেনি পুলিশ। এনিয়ে জেলার সচেতন মহলে উত্তেজনা বিরাজ করছে। জেলার সামাজিক ও রাজনীতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দও পৃথক পৃথক ভাবে এর প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
জানা যায়, ছাত্র ফ্রন্টের মৌলভীবাজার জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক সজিবুল ইসলাম তুষারের হাতে এক তরুণী ধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষণের শিকার তরুণী ধর্ষক তুষারের বাল্যবন্ধু বলে জানা গেছে। সাংবাদিক মাহমুদ এইচ খান সংবাদ ২৪ নামে একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সম্পাদক।
এ ঘটনায় ৩১ আগষ্ট সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজার মডেল থানায় ধর্ষণ মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। মামলায় সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট মৌলভীবাজার জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক (বহিস্কৃত) সজীবুল ইসলাম তুষারকে প্রধান আসামি করা হয়। মামলায় জেলা বাসদ নেতা আইনজীবী রায়হান আনসারী ও নারী সুরক্ষা আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা মার্জিয়া প্রভাকে ধর্ষকের সহযোগী উল্লেখ করা হয়। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন মৌলভীবাজার মডেল থানা ওসি ইয়াছিনুল হক। তিনি বলেন, তদন্ত করে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে নৈতিক স্খলন ও দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কর্মকান্ডের দায়ে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল বাসদের জেলা কমিটির বর্ধিত ফোরামের সদস্য রায়হান আনছারী ও ছাত্র ফ্রন্টের জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক সজিবুল ইসলাম তুষারকে দলীয় সকাল প্রকার সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এই ঘটনার সাথে জড়িত মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সহযোগী সদস্য মাহমুদ এইচ খানকেও প্রেসক্লাব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে মার্জিয়া ও আনসারী জানান, সাংবাদিক মাহমুদ ফেসবুকে যে অভিযোগ তুলে পোস্ট দিয়েছেন তা ভ্রান্ত এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। ফেসবুকে দেয়া পোস্ট তার নিজের মতামত এবং আংশিক সত্য।
ধর্ষণের শিকার নারী বলেন, পরিবার ও নিজের মানসম্মান এবং সামাজিক অবস্থানের কথা চিন্তা করে মামলা করিনি। পরিবারকে জানানোর পর তারা মামলা করতে সম্মতি দেয়নি। পরে দেখলাম আমাকে দোষারোপ করা হচ্ছে। ধর্ষণের ঘটনাটিকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। তখন মারাত্মক আঘাত পেয়েছি। তাই পরিবারের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে মামলা করেছি। আশা করছি, সঠিক বিচার পাব।
শেখ বোরহান উদ্দিন (রহঃ) ইসলামী সোসাইটির প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান এম, মুহিবুর রহমান মুহিবের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সম্মিলিত সামাজিক উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি খালেদ চৌধুরী, সচেতন নাগরিক ফোরাম মৌলভীবাজারের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন মাতুক, জেলা জাতিয় পার্টির সভাপতি সৈয়দ শাহাব উদ্দিন আহমদ, যৌন হয়রানী নির্মূলকরন নেটওয়ার্কের সভানেত্রী রাশেদা বেগম, জেলা যুব সংস্থার সভাপতি আলিম উদ্দিন হালিম, বাধন থিয়েটারের সভাপতি রুহেল আহমদ, দৈনিক কালেরকন্ঠ শুভ সংঘের সাধারন সম্পাদক তাকবীর হোসেন ও কে, এম, আকলু প্রমুখ।
এছাড়াও মানববন্ধনের জেলার বিভিন্ন শ্রেীণ ও পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্দনে বক্তারা বলেন, মৌলভীবাজারে অসামাজিক কার্যকলাপ হতে দেয়া যাবে না। যারা মাদকের আসর বসিয়ে মদ্যপ অবস্থায় ধর্ষন করে তা নিজেদের ফেইসবুক আইডিতে প্রচার করেছে তাদেরকে অভিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দিতে হবে। অন্যতায় জেলার সর্বস্থরের মানুষকে সাথে নিয়ে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।