ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
ঘটাকার মৌলভীবাজার সদর উপজেলা আওয়ামীলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল গত ২রা ডিসেম্বর আয়োজন করা হলেও ফলাফল গড়িয়েছে অশ্ব ডিম্বে। উদ্বোধনী অধিবেশনে ছাত্রলীগের হট্ট গোল ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং কাউন্সিল অধিবেশনে পরস্পর প্রতিদ্বন্ধী গ্রুপের যুদ্ধংদেহী তথা আপসহীন মনোভাবের প্রেক্ষিতে ফলাফল শুন্য অবস্থায় সম্পন্ন হলো সম্মেলন ও কাউন্সিল। ফলে, খালি হাতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ফিরে গেছেন স্ব স্ব অবস্থানে। অপর দিকে তৃণমূলে আওয়াজ উঠেছে-কাউয়ায় খাইছে সম্মেলন।
পন্ড হয়ে যাওয়া সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে সংশ্লিষ্ট মহলে ছড়িয়ে পড়েছে নানান কথা। তবে এ বাস্তবতা সত্য যে, সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে তৃণমূলে সাড়া পড়েছিলো। ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য এ সম্মেলনকে ঘিরে ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন পর্য্যায়ের নেতাকর্মীরা সরব হয়ে উঠেছিলো। আশা ছড়ানো হয়েছিলো-কাউন্সিলারদের মতামত কিংবা পরোক্ষ ভোটে নেতা নির্বাচন করা হবে। যার ফলে সম্মেলনকে ঘিরে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছিলো সবখানে। বিলবোর্ড ছেয়ে গিয়েছিলো গোটা শহর। জেলা আওয়ামীলীগের অতীত গ্রুপিং এর উত্তরাধিকার ধারণ করে সদর উপজেলার সম্মেলন ও কাউন্সিলকে ঘিরে দ্বিমুখী প্রচারণার পাশাপাশি শোডাউনও জমে উঠোছিলো। দুই প্রতিদ্বন্দী পক্ষ নিজ নিজ তরফে ওয়ার্ড এবং ইউনিয়ন পর্য্যায়ের নেতৃবৃন্দকে ম্যানেজ করার পন্থা অবলম্বন করা হয়েছিলো- সাধারণ কাউন্সিলরদের পক্ষে টানার জন্য। সমঝোতার ভিত্তিতে যদি পদ বাগানো না যায়- তাহলে কাউন্সিলরদের পরোক্ষ ভোটেই হবে মূলশক্তি, এমন ধারণাবোধও পল্লবিত হয়েছিলো তৃণমূল মহলে। কিন্তু কাউন্সিলরদের প্রতিও ভরসা রাখতে পারছিলেননা কোন কোন মহল। এমতাবস্থায় সম্মেলনকে পন্ড করার পথই বেছে নিয়েছিলো একটি চক্র। তাই মূল অধিবেশনে ছাত্রলীগের কাঁধে বন্দুক রেখে শ্লোগান ও পাল্টা শ্লোগান হাঁকানো হয়েছিলো ছক অনুসারে। এমন মতামত ব্যক্ত করেছেন অনেক কাউন্সিলর। অন্যদিকে কাউন্সিল অধিবেশনে প্রতিদ্বন্দী দুই গ্রুপের মধ্যে সমঝোতার প্রসঙ্গটিও প্রভাব ফেলতে পারেনি। জানাগেছে, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন দুপক্ষকে দুবার সময় নির্ধারণ করে দেন সমঝোতার জন্য। কিন্তু সে আহব্বানও ব্যর্থ হয়। ববং বিতর্ক এবং অভিযোগের কাসুন্দি বাড়তে থাকে। এমতাবস্থায় নিকটবর্তী উপজেলা সমূহের অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সমঝোতা মূলক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়াও এখানে ব্যর্থ হয়। এখন কমিটি গঠন করে দেয়া হবে কেন্দ্র থেকে। এই প্রক্রিয়াটিও বিতর্কের জন্ম দেবে বলে অনেক তৃণমূল কর্মী অভিযোগ ব্যক্ত করেছেন।
পন্ড হয়ে যাওয়া সম্মেলন ও কাউন্সিলে কার লাভ কার ক্ষতি সে নিয়েও হিসাব নিকাশ চলছে। তবে সভাপতি পদে আকবর আলী এবং সম্পাদক পদে আবু সুফিয়ানের প্রার্থীতা নিয়ে বুঁদ বুঁদ উঠেছে বেশীমাত্রায়। আবু সুফিয়ান জেলা আওয়ামীলীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদকের পদে থেকে উপজেলা আওয়ামীলীগের সম্পাদকের পদে প্রতিদ্বন্দিতার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন- কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক। অপর দিকে একজন প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার হিসেবে সুনামগঞ্জের হাওড় রক্ষা বাঁধে কারচুপির জন্য দু’দকের মামলার অন্যতম আসামী থাকার পর তার সভাপতি প্রার্থীতাও বিতর্কিত হয়ে উঠেছে।