স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজার কোর্ট এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ৪টাকার কার্ডিজ পেপার বিক্রি হচ্ছে ১’শ টাকায়। এই সুযোগে জেলার কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও নিঃস্ব হচ্ছে জেলার খেটে খাওয়া মানুষ। জেলাব্যাপি ১’শ টাকার স্ট্যাম্পও বিক্রি হচ্ছে ১’শ ২০ থেকে ১’শ ৩০ টাকায়। মৌলভীবাজার জজ কোর্টের একাধিক আইনজীবি বলেন, বাজারে অহরহ নখল নোটারিয়ান ও বিশেষ স্ট্যাম্প পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু এ পর্যন্ত জেলা প্রশাসন একটি দোকানেও অভিযান চালায়নি। অভিযোগ রয়েছে, যে যার মতো করে পারছে, গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে। স্ট্যাম্প বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারের কোনো বিধানই মানা হচ্ছে না।
এদিকে জেলা ট্রেজারি শাখায় বিভিন্ন দামের স্ট্যাম্পে কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। ট্রেজারি শাখায় দায়িত্বর কর্মকর্তাদের ঘুষ না দিলে লাইসেন্সধারী ভেন্ডারদের স্ট্যাম্প দেয়া হচ্ছে না বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। ভেন্ডার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, ট্রেজারিতে একাধিক দিন হেটে ও ফোন দিয়েও চাহিদা মতো স্ট্যাম্প পাচ্ছেন না। ভেন্ডার বিক্রেতারা লাইসেন্স বাতিলের ভয়ে প্রতিবাদও করতে পারছেন না। আবার ব্যবসা ধরে রাখতে বাধ্য হয়ে ঘুষ দিয়েই স্ট্যাম্প কিনতে হচ্ছে।
নাম গোপন রাখার শর্তে কোর্ট এলাকার শাকুরা মার্কেট, বড়লেখা ও কুলাউড়া উপজেলার একাধিক ভেন্ডার ব্যবসায়ী বলেন, ১’শ টাকার ১০০টি স্ট্যাম্পের জন্য ট্রেজারি কর্মকর্তাদের ৫০০/১০০০ টাকা ঘুষ দিতে হয়। ঘুষ না দিলে নানা অযু হাত দেখিয়ে আমাদের বিদায় করে দেন। ঘুষ দিলে ঠিকই স্ট্যাম্প পাওয়া যায়। তবে ট্রেজারিতে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা ঘুষ নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
সরেজমিন রোববার দুপুরে মৌলভীবাজার শাকুরা মার্কেটের রিয়াদ এন্টারপ্রাইজে একটি কার্ডিজ পেপার কিনতে গেলে প্রতিবেদকের কাছে ১’শ টাকা দাম চাওয়া হয়। একইভাবে শাহ মোস্তফা ও মজুমদার এন্টারপ্রাইজেও ১টি কার্ডিজ পেপারের দাম ১’শ টাকা চাওয়া হয়। এ সময় প্রতিবেদক রহমান এন্টারপ্রাইজ থেকে ১’শ টাকার ২টি স্ট্যাম্প কিনলে প্রতিবেদকের কাছ থেকে প্রতিটি স্ট্যাম্পের দাম ১’শ ২০টাকা রাখা হয়। দেখা যায়, গ্রাহকরা বাধ্য হয়ে বেশি দাম দিয়েই কিনছেন।
নখল নোটারিয়ান ও বিশেষ স্ট্যাম্প বিক্রির বিষয়ে মৌলভীবাজার জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবি এডভোকেট শ্রীবাশ রঞ্জন দেব বলেন, “বাজারে অহরহ নখল নোটারিয়ান ও বিশেষ স্ট্যাম্প পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো প্রদক্ষেপ নিচ্ছে না। এটা তারা দেখেও না দেখার বান করছেন।
ট্রেজারি অফিসার আরিফুল ইসলাম অতিরিক্ত দামে কার্ডিজ পেপার বিক্রির বিষয়ে বলেন, এরকম কোনো জায়গায় হলে আমাদেরকে জানাবেন। আমরা অভিযান চালাবো। আপনার ট্রেজারিতে ঘুষ আদায় করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “দায়িত্বরত কর্মকর্তারা এরকম কোনো ভেন্ডার ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ আদায় করলে সরাসরি আমাদের সাথে দেখা করতে বলবেন।
Post Views:
0