ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সিকৃবি) চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ঘোরি মো. ওয়াসিম আব্বাসকে বাস থেকে ফেলে হত্যার ঘটনায় সিকৃবি কর্তৃপক্ষ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে। সোমবার দুপুরে ৩০২/৩৪ ধারায় মৌলভীবাজার মডেল থানায় এ মামলা অভিযোগ দায়ের করেন সিকৃবির প্রক্টর প্রফেসর ড. মৃত্যুঞ্জয় কুন্ড। (মামলা নং-২২)। কিন্তু ওয়াসিমের পরিবার মামলা করতে রাজি হয়নি।
মামলায় আসামী করা হয়েছে, বাস চালক জুয়েল আহমদ (৩০), হেলপার মাসুক মিয়া (৩১) ও সুপারভাইজার শেফুল মিয়া (৩৫) কে। এর মধ্যে সুপারভাইজার এখনও পালতক। ঘটনার সময় সাথে থাকা নিহত ওয়াসিমের ১০ জন সহপাঠিকে মামলার সাক্ষী করা হয়েছে।
মামলার এজহার থেকে জানা যায়, ২৩ মার্চ বিয়ের দাওয়াত খেয়ে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার বালিধারা বাজার সংলগ্ন নাঈমা ফিলিং ষ্টেশনের সামন হইতে জামালপুর থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী উদার (ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-১২৮০) পরিবহনের একটি বাসে তারা উঠেন। এরপর মৌলভীবাজারের শেরপুর মুক্তিযোদ্ধা চত্বরে নামার সময় ভাড়া নিয়ে বাস সুপারভাইজার সেবুল এর সাথে বাকবিতন্ডা হয়। এসময় সিকৃবি’র ১১ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৯ জন ভালোভাবে নামেন। কিন্তু ওয়াসিম ও রাকিব নামার আগেই বাস চালক দ্রুত গতিতে চালিয়ে যায়। এসময় বাসের সুপারভাইজার ওয়াসিম ও রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে। রাকিব হেলপারের ধাক্কায় বাস থেকে ছিটকে পড়ে কনুইতে আঘাত পায়। নিহত ঘোরি ওয়াসিম তার ডান হাত দিয়ে বাসের দরজার হাতলে ধরে এবং পা দুটি ঝুলে কোমরের নিচের অংশ গাড়ির নিচে চলে যায়। ওয়াসিমের এ অবস্থা দেখে সহপাঠিরা গাড়িটি থামানোর জন্য চিৎকার করলেও ড্রাইভার কর্ণপাত করেনি। ড্রাইভার দ্রুত গতিতে বাস চালিয়ে যাওয়ায় ওয়াসিমের শরীর গাড়ির নিচে পড়ে গুরুত্বর আহত হয়। পরে সহপাঠিরা ঘোরি ওয়াসিম ও রাকিবকে সিলেট ওসমানি হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ওয়াসিমকে মৃত ঘোষণা করেন।
এজহার থেকে আরো জানা যায়, ঘটনার পর বাসটি সিলেট যাওয়ার পথে ওসামনীনগর উপজেলার উনিশ মাইল নামক জায়গায় ফেলে চলে যায় চালক। পরে পুলিশ গিয়ে বাসটি আটক করে। ২৩ মার্চ রাতেই অভিযান চালিয়ে চালক মোঃ জুয়েল ও হেলপার মাসুক মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বর্তমানে তারা মৌলভীবাজার জেলা কারাগারে আছেন।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল আহাম্মদ মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
Post Views:
0