কুলাউড়া প্রতিনিধি:
কুলাউড়া উপজেলার মোবারকপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক প্রসব করানো এবং স্বাভাবিক প্রসবে নারীদের উদ্বুদ্ধ করায় জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব বান কি মুন ২০১১ সালে ক্লিনিকটি পরিদর্শণ করেন। স্বাভাবিক প্রসবের ধারাবাহিকতা আজঅবদি ধরে রেখেছে ক্লিনিকটি। যারফলে ২০১৯ সালে এসে আবারও মোবারকপুর কমিউনিটি ক্লিনিকটি স্বাভাবিক প্রসব সেবায় অবদানের জন্য সেরার স্বীকৃতি পায়। সোমবার ১৮ ফেব্রুয়ারি অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ক্রেস্ট ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয় ক্লিনিকে কর্তব্যরতদের হাতে।
উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার মোবারকপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে গর্ভবতী মায়েদের নরমাল ডেলিভারি করানো হয়। এখানে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার হিসেবে কর্মরত আছেন শামসুন নাহার। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০১১ সালের জুলাই মাস থেকে স্বাভাবিক প্রসব সেবা শুরু হয় ওই ক্লিনিকে। ২০১১ সালের ১৭ জুলাই পাল্লাকান্দি গ্রামের হতদরিদ্র পিয়ারুন বেগমের বিনাঅস্ত্রোপাচারে শিশু ইমরানের জন্ম হয়। যদিও থাকে অন্য হাসপাতালে সিজারের পরামর্শ দেয়া হয়েছিলো। সেসময় বিষয়টি বেশ আলোচিত হয়। ওই বছর ১৫ নভেম্বর জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব বান কি মুন বাংলাদেশের স্বাস্থ্যসেবার চিত্র দেখতে মোবারকপুর ক্লিনিক পরিদর্শণ করেন। জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন শিশু ইমরানকে কোলে তুলে নেন এবং ক্লিনিকের ভূয়সী প্রসংশা করেন। এদিকে ২০১১ থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত এই মোবারকপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে নরমাল ডেলিভারিতে ২৬৫ টি শিশুর জন্ম হয়েছে। বর্তমানে কমিউনিটি ক্লিনিকের হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার শামসুন নাহারের সাথে স্বাস্থ্য সহকারী রেহানা বেগমও স্বাভাবিক প্রসব সেবায় সহায়তা করে থাকেন। সোমবার ১৮ ফেব্রুয়ারি মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন কার্যালয়ে গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডা এবং সিভিল সার্জন ডা. শাহজাহান কবীর চৌধুরীর সম্মিলিত উদ্যোগে কুলাউড়া উপজেলার মোবারকপুর কমিউনিটির হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার শামসুন নাহারকে চমৎকার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ একটি সুদৃশ্য ক্রেস্ট এবং আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।
কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুরুল হক জানান, এটা তাদের একটা কাজের স্বীকৃতি। এটা পাওয়ার পর তাদের দায়িত্ব আরও কয়েকগুণ বেড়ে গেলো। মোবারকপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে কর্মরতরা তাদের সাফল্যের এই ধারা অব্যাহত রাখতে সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।
উল্লেখ্য, মোবারকপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক প্রসব সেবা ছাড়াও মা ও নবজাতকের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা, ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো, প্রসূতিদের প্রতিষেধক টিকা দেয়া, সবধরনের চিকিৎসা সেবা এবং পরিবার পরিকল্পনা সম্পর্কিত সেবা ও পরামর্শ দেয়া হয়।
Post Views:
0