কমলগঞ্জ প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজার-৪ (কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল) আসনে প্রচার-প্রচারনায়, উঠান বৈঠকে ও গণসংযোগে তৎপর আওয়ামীলীগ। অপরদিকে বিএনপির প্রার্থী গনসংযোগ করলেও তার নেতা-কর্মীরা মামলা ও ধরপাকড়ের ভয়ে দৌড়ের ওপর আছেন। সাধারন ভোটারদের মধ্যে ভোট নিয়ে তেমন একটা উচ্ছাস দেখা যাচ্ছেনা। ভোটের ব্যাপারে জানতে চাইলে কোন কথা বলছেন না। যেন অনেকটা নিরব অবস্থানে আছেন। অন্যদিকে আওয়ামীলীগ ও বিএনপির প্রচার-প্রচারনায় ও উঠান বৈঠকে বিচ্ছিন্ন ভাবে হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।
আওয়ামী লীগের প্রার্থী ড.মোঃ আব্দুস শহীদ এমপির পক্ষে স্লোগানে মূখর কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল নির্বাচনী এলাকা। দলীয় নেতা-কর্মী,শিশু-কিশোর সহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ নৌকা প্রতিকের পক্ষে মাঠে নেমেছেন। প্রতিদিনই সকাল থেকে গভীর রাত্রি পর্যন্ত নানামূখী প্রচারে ও গণসংযোগ শহর ,গ্রাম, পাড়া,ম হল্লা মূখরীত। এছাড়া পোষ্টার ,ব্যানারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকার গুরুত্বপূর্ণ সব অলিগলি। তাছাড়া প্রচারের কাজে ব্যবহার হচ্ছে মাইকিং, লিফলেট, ব্যানান ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
নৌকার প্রার্থী ড.মোঃ আব্দুস শহীদ এমপি এই আসন থেকে ঠানা ৫ বারের সাংসদ। ৬ষ্ট বারের জন্য লড়াইয়ে নেমেছেন। তিনি তার নির্বাচনী প্রচারনায় গত ১০ বছরের এলাকার উন্নয়নের নানা ফিরিস্তি তুলে ধরছেন। এলাকার প্রত্যন্ত এলাকা বিদ্যুতায়ন করেছেন। রাস্তা-ঘাট পাকা করন করেছেন। কমলগঞ্জ কে পৌরসভায় ঊন্নীত করন সহ নানান উনয়ন করেছেন।
তিনি আরো বলেন,আওয়ামী লীগে কারনেই এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। এলাকার মানুষ শান্তিপূর্ণ ভাবে চলাফেরা করতে পারছেন। এই এলাকার মানুষের সুখে-দুঃখে মানুষে পাশে ছিলাম সব সময়। তাই আপনাদের কাছে ভোট চাওয়ার অধিকার আছে একমাত্র আমারই।
এদিকে ,বিএনপি’র প্রার্থী নির্বাচনী মাঠে গণসংযোগ ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ভোট চাইতে পারলেও তার নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা হামলা-মামলা, পুলিশী হয়রানীর কারনে দৌড়ের ওপর আছেন। তাই নিজের জীবনের ও কর্মী সমর্থকদের জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার বরাবরে চিঠি পাঠিয়েছেন মৌলভীবাজার-৪(শ্রীমঙ্গল-কমলগঞ্জ) ঐক্যফ্রন্ট ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মুজিবুর রহমান চৌধুরী।
চিঠিতে তিনি লিখেন, নির্বাচনী প্রচার চালাতে গিয়ে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, আমার পোস্টার ছিড়ে একই স্থাানে প্রতিদ্বন্দি প্রার্থীর পোস্টার লাগানো হচ্ছে।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, তাঁর নির্বাচনী বিভিন্ন সভায় হামলা ও ভাংচুর করা হচ্ছে, নেতাকর্মীদের হুমকি ধামকি দেয়া হচ্ছে। তাঁর নির্বাচনী সভার আশেপাশে দা, লাঠি, লোহার রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মহড়া দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
চিঠিতে তিনি আরও লিখেন, প্রায়ই আমার নির্বাচনী প্রচারনায় যাতায়াতের পথে হেলমেটধারী অজ্ঞাত কিছু মোটর বাইক তার গাড়ীকে অনুসরন করে যে কারনে আমি এবং আমার নেতাকর্মীরা প্রচন্ড নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি। স্থাানীয় প্রশাসনকে অভিযুক্ত করে তিনি বলেন, আমার দলীয় নেতীকর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার করছে। আওয়ামীলীগ ও অংগ সংগঠনের কিছু নেতাকর্মীর বাঁধার মুখে মৌলভীবাজার-৪ আসন(কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল)-এর কমলগঞ্জে বিএনপির প্রার্থী হাজী মুজিবুর রহমান চৌধুরীর পক্ষের ৩টি উঠান বৈঠক পন্ড হয়ে যায়।
(১৫ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে কমলগঞ্জের ৩টি পৃথক স্থানে এ ঘটনাটি ঘটেছে। স্থান সমুহ হচ্ছে, নগর, ফুলবাড়ী চা বাগান ও বটতল এলাকা।
১৯ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৭টায় কমলগঞ্জের আদমপুর ইউনিয়নের জালালপুর ঈদগাহ সংলগ্ন নৌকা মার্কার প্রচারকর্মীদের উপর হামলা ও রিক্সায় অগ্নি সংযোগের অভিযোগ করা হয়েছে। রিক্সা চালক সহ ৩জন আহত হওয়ারও অভিযোগ করা হয়। আহতরা হচ্ছেন, মুহিবুর রহমান(৫০), তারেকুল ইসলাম(২২)ও রিক্্রা চালক মনীন্দ্র শব্দকর(৪০)।
এদিকে ঐদিন রাতে আদমপুর ইউনিয়ন যুবদল সদস্য ওয়াসির মিয়া অভিযোগ করে বলেন, রাত সাড়ে ৮টায় স্থানীয় দূর্বৃত্তরা অতর্কিত ভাবে হামলা চালিয়ে জুঁই টেলিকম, রহমত আলীর জুতার দোকান ও মোজাহিদুল ইসলামের ফার্মেসীতে ভাংচুর করে।
এদিকে অন্য যে কোন নির্বাচনে সাধারন ভোটারদের মধ্যে যে উছাস বা প্রার্থীদের পক্ষে-বিপক্ষে আলাপ-আলোচনায় সবর অবস্থা দেখা দিত এবারের নির্বাচনে তেমনটা দেখা যাচ্ছেনা। চায়ের দোকান বা অফিস-আদালতে, কিংবা কোন আড্ডায় ভোট নিয়ে কোন আলোচনা নেই বললেই চলে। ভোট নিয়ে সাধারণ ভোটাররা অদৃশ্য আতংকের মধ্যে আছেন।
৫০ বছর বয়সি ভোটার নুর মিয়ার সাথে ভোটের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি আঞ্চলিক ভাষায় বলেন ,ভোটর দিন আইক বা ,তখন দেখা যাইবোনে কিতা করি। ভোটার আহমদ আলী,সোহেল রানা,আলাল মিয়া বলেন,অখন সময় ভালা নায়,কোন সময় কিতা হয় কওয়া যারনা। ভোট নিয়া আলাপ না করাই ভালা। ভোটরদিন আইলে একটা ভোট দিলাইমু। আর কিতা।
আওয়ামীলীগের প্রচারনা জমজমাট: বিএনপি দৌড়ের ওপর
