বাবা জানিনা তুমি কেমন আছ। মাঝে মাঝে জানতে ইচ্ছে করে তুমি কি করছ? কেমন কাঠছে তোমার দিনগুলো? বাবা জান তোমায় খুব বেশী মিছ করছি আমি। কতই না কষ্ট হয় তোমার জন্য। অনেক দিন হয়ে গেলো তোমার সাথে কোন কথা হয় না। কিভাবে কাঠছে আমার দিনগুলো তা তোমাকে জানাতে খুব ইচ্ছে করে। কিন্তু কিভাবে তোমাকে পাই। আমার মনে লোকানো কথাগুলো কিভাবে তোমার কাছে বলব।
আমার প্রিয় বাবা মো: মখলিছ উর রহমান। ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর সোমবার দিবাগত রাতে ইন্তেকাল করেন। আমরা ৬ ভাই ৩ বোনকে এতিম করে বাবা এ পৃথিবীর মায়ার বন্ধন ছেড়ে চিরদিনের জন্য ফিরে যান না ফেরার দেশে।
বাবা তুমি আমাদের জন্য কতই না কষ্ট করেছ। আমরা কি তোমাকে কিছু দিতে পেরেছি। আর তুমিও তো বাবা আমাদের কাছে কোন কিছু আশা করনি। তুমি চেয়েছিলে আমাদেরকে মানুষের মত মানুষ করতে। বাবা তুমি চেষ্টার কোন ত্রুটি করনি। আমরা পারিনি সেভাবে তৈরী হতে, তুমি যেভাবে চেয়েছিলে।
বাবা আমরা পরিবারের সবাই যখন কোন বিষয়ে একসাথে বসে কথা বলতাম তখন তোমার সিদ্ধান্ত ছাড়া কোন কিছু করতে পারতাম না।
বাবা তুমি যখন না ফেরার দেশে চলে গেলে, তখন থেকে বুঝতে পেরেছি তুমি কোন জিনিষ। বাবা তোমাকে যেদিন সাদা কাফনের কাপড় পড়িয়ে কবরে রেখে আসছিলাম, তখন মনে হয়েছিল আমার জীবনের সব কিছু ফেলে রেখে চলে যাচ্ছি। তখন তোমার জন্য খুব কষ্ট হয়েছিল বাবা। তোমাকে কবরে একা রেখে আমরা স্বার্থপরের মতো চলে আসছি। বুকে কষ্ট চাপা রেখে চলে এসেছিলাম তোমার কবর প্রান থেকে।
গত ১৪ নভেম্বর বাবা তোমার মৃত্যুর দুই বছর পূর্ণ হলো। বাবা ঐ দিনে তোমার কবর জিয়ারতে যাইনি। কিভাবে স্বার্থপর হয়ে গেলাম। তবে বাবা আমি যখনই দোয়া করতে বসি তখন তোমার জন্য দোয়া করি। তোমার জন্য প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পরে দোয়া করি। তোমাকে স্মরণ রেখে বলি রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী ছগীরা। এই দোয়া বাবা তোমার জন্য সব সময় করি। আল্লাহ তোমাকে কবর প্রানে শান্তিতে রাখেন সেই কামনাই করি।
মৃত্যুর আগের সময়ের কথাগুলো খুব মনে পড়ে বাবা। বাবা তখন আমার পরীক্ষা থাকার কারণে তোমাকে সময় দিতে পারিনি। তুমি যখন অসুস্থ অবস্থায় ছিলে সেই সময়ের কথাগুলো খুব মনে পড়ে। সেই অসুস্থ অবস্থার কথাগুলো বারবার হৃদয়ে নাড়া দেয়। বাবা তোমাকে ছাড়া কোন শান্তি পাব না মনে হয়। বিশ্বাস করো বাবা, সেদিনই হয়তো শান্তি পাবো, যেদিন তোমার মতো তোমারই পাশে শুয়ে আমি বলতে পারবো, বাবা আমি তোমাকে ভালোবাসি, ভীষণ ভালোবাসি।
লেখকঃ আশরাফ আলী
তরুণ লেখক ও সাংবাদিক
(মরহুমের পঞ্চম ছেলে )