স্টাফ রিপোর্টার:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার জালালিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার মাওলানা আব্দুস শহীদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে মাদরাসার ষষ্ঠ, সপ্তম ও নবম শ্রেণীর ১৫ জন শিক্ষার্থী স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর পাঠানো হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ইতি মধ্যে একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মাদরাসা সুপার প্রভাব কাটিয়ে আপোষে মীমাংসা করার পায়তারা করছেন এবং সুপারের কুকর্ম অন্য শিক্ষকদের উপর চাপিয়ে দেয়ারও প্রচেষ্টা করছে একটি মহল। সাংবাদিকরা তথ্য জানতে মাদরাসার প্রধান গেইট গেলে তালাবদ্ধ রেখে সাংবাদিকদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, মাদরাসা সুপার মাওলানা আব্দুস শহীদ নবম শ্রেণীতে গিয়ে অভিযোগকারী ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্সকাতর স্থানে হাত দেন ও ছাত্রীকে জড়িয়ে চুমু দেন। জানা যায়, এভাবে ওই সুপার ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্রীদের পেঠের মধ্যে হাত দেয়া এবং ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীদের সাথে অশালীন আচরণ করে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে।
এদিকে ১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার বিকালে কুলাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে সুপারের অশালীন আচরণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য একটি অভিযোগ দেন নবম শ্রেণীর এক ছাত্রী। এছাড়া একই দিন বিকালে ঐ ছাত্রীর অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে আরেকটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নবম শ্রেণীর ওই ছাত্রী তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ১৭ অক্টোবর সুপার হুজু ক্লাসে প্রবেশ করলে আমরা দাঁড়িয়ে সালাম দেই। পরে আমি দাঁড়ানো থাকা অবস্থায় সুপার হুজুর আমাকে চুমু দেন। আমি তখন লজ্জায় ক্লাসের বেঞ্চে বসে পড়ি। একই ঘটনায় আমার আরেক বান্ধবি গত এক মাস থেকে মাদরাসায় আসছে না। মাদরাসার নবম ও দশম শ্রেণীর ১৫/২০ জন শিক্ষার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করে একই কথা বলেন।
মাদরাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুর রউফের স্বাক্ষরিত পত্রে ঘটনাটি তদন্ত করার জন্য আতিকুর রহমান আখইকে আহবায়ক, মাদরাসার শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্য শামছুল ইসলাম খান ও শিক্ষক মোঃ আব্দুস সামাদকে সদস্য করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত সুপার মাওলানা আব্দুস শহীদ বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, আমার সম্মান ক্ষুন্ন করতে একটি কুচক্রি মহল মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে। ঘটনার সত্যতা যাছাইয়ের জন্য মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
এ বিষয়ে মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ আব্দুর রউফ বলেন, আমাদের হাতে তদন্ত প্রতিবেদন এসে পৌঁছেছে। প্রতিবেদন যাছাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ আনোয়ার বলেন, বিষয়টি নিয়ে ইউএনও সাহেবের সাথে কথা হয়েছে এবং তিনি দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
কুলাউড়ায় মাদরাসা সুপারের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ
