ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে দুটি পক্ষের মধ্যে ব্যক্তিগত বিরোধ নিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। ইতিমধ্যে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তৎপর রয়েছেন। তবে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
জানা যায়, সুলতানপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী, সুলতানপুর আক্তার উদ্দিন মেহেরুন নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও সুলতানপুর পুরাতন মসজিদের সভাপতি আবু জাবেদ পাপ্পুর কর্মকান্ডে অতিষ্ট হয়ে উঠেছেন স্থানীয়রা। তিনি ওই এলাকার বাসিন্দা রাশিদ আলীকে ব্যবহার করে স্থানীয়দের কয়েক দিন যাবত নানা হুমকি দিয়ে আসছেন। আবু জাবেদ পাপ্পু’র চত্রছায়ায় রাশিদ আলী এমনটি করছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।
ইউপি সদস্য মোঃ ফজল আহমদ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাশিদ আলী দীর্ঘ দিন ধরে স্থানীয়দের প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে আসছে। সে গ্রামে অনেকটা বেপরোয়া ভাবে চলাফেরা করে। এঘটনা ছাড়াও রাশিদ আলী’র বিরুদ্ধে এলাকায় অনেক অভিযোগ রয়েছে। সুলতানপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী, সুলতানপুর আক্তার উদ্দিন মেহেরুন নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সুলতানপুর পুরাতন মসজিদের সভাপতি আবু জাবেদ পাপ্পু’র চত্রছায়ায় এমনটি হচ্ছে বলে তাদের অভিযোগ। সম্প্রতি প্রাথমিক অধিদপ্তর থেকে গেজেট বলা হয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি পদে নি¤েœ ডিগ্রী উত্তির্ণ হতে হবে। কিন্তু সুলতানপুর আক্তার উদ্দিন মেহেরুন নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি আবু জাবেদ পাপ্পু’র ওই শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই। যার কারণে তিনি আগামী মেয়াদে সভাপতি পদে দাঁড়াতে পারছেন না। দিকে সুলতানপুর পুরাতন মসজিদের সাধারণ সম্পাদক ও মৌলভীবাজার জজ কোর্টের আইনজীবি এডভোকেট আহমেদুর রহমান খান মুরাদ সভাপতি পদে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করার ইচ্ছ পোষন করেন। বর্তমান সভাপতি আবু জাবেদ পাপ্পু চাচ্ছেন সভাপতি পদে তার স্ত্রী রোকসানা বেগমকে দাঁড় করাতে। এ থেকে এডভোকেট আহমেদুর রহমান খান মুরাদ ও বর্তমান সভাপতি আবু জাবেদ পাপ্পু’র মধ্যে অন্ধর দ্ব›দ্ব শুরু হয়। এই ঘটনাকে অন্যদিকে প্রভাবিত করতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি আবু জাবেদ পাপ্পু মসজিদের টাকা আত্মাদের অভিযোগ তুলেন।
ইউপি সদস্য মোঃ ফজল আহমদ বলেন, ১২ এপ্রিল আমি পাশর্^বর্তী একটি বাড়িতে অন্য একটি বিষয়ে বিচারে ছিলাম। তখন আমার মোবাইলে ফোন আসে এলাকায় সংঘর্ষ চলছে। ঘটনা স্থলে গিয়ে দেখতে পাই এক পক্ষে রাশিদ আল ও আবু জাবেদ পাপ্পু এবং অপর পক্ষে উম্মর মেম্বারে ছেলে আব্দুল হান্নান ও এডভোকেট আহমেদুর রহমান খান মুরাদের মধ্যে সংঘর্ষ বলছে। স্থানীয়দের সহযোগীতায় সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা করি। এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ উত্তেজিত হলে থানায় ফোন করে পুলিশ এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এসময় সিদ্ধান্ত হয় করোনা ভাইরাস থেমে গেলে স্থানীয়ভাবে এটা সমাধান করে দেয়া হবে। এরই মধ্যে উভয় পক্ষ যাতে কোনো প্রকার মামলা বা ফের সংঘর্ষে না জড়ায়। কিন্তু রাশিদ আলী আমাদের কথা অমান্য করে প্রথমে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরেও অপর পক্ষও অভিযোগ করে।
পৃথিমপাশা ইউপি চেয়ারম্যান নবাব আলী বাখর খান হাসনাইন বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ ফোর্স এনে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। এসময় এসআই মাসুদ আলম সহ সিদ্ধান্ত হয়েছিল করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রনে আসার পর উভয় পক্ষকে নিয়ে বসে সমাধান করা হবে। কিন্তু এরই মধ্যে প্রথমে রাশিদ আলী ও পরে অপর পক্ষ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে। বিষয়টি এখন মামলাধিন। আমাদের কিছু করার নেই।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আহমেদুর রহমান খান মুরাদ বলেন, সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ভাবে আমার সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য টাকা আত্মৎসাদের মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। এপর্যন্ত মসজিদের সকল টাকা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের যৌথ হিসাব থেকে লেনদেন করা হয়েছে।
মসজিদের কমিটির অর্থ সম্পাদক আব্দুল মান্নান বলেন, মিথ্যা টাকা আত্মসাদের অভিযোগ তোলা হয়েছে। সভাপতি যে ১৩ লক্ষ টাকার কথা বলছেন, ওই টাকার মালামাল ফুল মিয়া নামের একজন লোক দিয়েছেন। তিনি নগদ কোনো টাকা দেননি। নুরুল ইসলাম শাহান এর দোকান থেকে ১৩ লক্ষ টাকার সমপরিমান মালামল দিয়েছেন। এখানে টাকা আত্মসাদের কোনো সুযোগ নেই। ফান্ডের বাকী টাকা উভয়ের স্বাক্ষরে লেনদেন হয়েছে।
অভিযুক্ত রাশিদ আলী’র কাছে জানতে চাইলে তিনি পরে কথা বলছেন বলে অপর প্রান্ত থেকে সংযোগ কেটেদেন।
এবিষয়ে মসজিদ কমিটির সভাপতি আবু জাবেদ পাপ্পু ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি (০১৭৪১৪৫৮৫৭২)।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মাসুদ আলম বলেন, এখানে মসজিদের টাকা আত্মসাদের কোনো বিষয় নয়। মূল বিষয়টি হচ্ছে মসজিদ কমিটির সভাপতি ও সুলতানপুর আক্তার উদ্দিন মেহেরুন নেছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বর্তমান সভাপতি একই ব্যক্তি। আগামীতে ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি পদে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আহমেদুর রহমান খান মুরাদ ইচ্ছা পোষন করছেন। এ থেকে উভয়ের মধ্যে দ্ব›দ্ব শুরু হয়েছে।
সুলতানপুর পুরাতন মসজিদের একাধিক মুসল্লি টাকা আত্মসাদের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ব্যক্তিগত বিরুদকে মসজিদের দিকে প্রভাবীত করা হচ্ছে।
Post Views:
0