বিশেষ প্রদিনিধিঃ
মৌলভীবাজারে ৭১টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে নবায়ন নয় একটিও। লাইসেন্স না নিয়েও ১১টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার শুরু থেকেই রমরমা বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এর বাহিরেও রয়েছে বেশ কয়েকটি। প্রতিষ্ঠান গুলো সরকারি কোনো প্রকার নির্দেশনা না মেনে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো পরিচালনা করছে। অভিযোগ রয়েছে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগের উদাসিনতার কারনে এমনটি হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এ সকল ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রয়োজনীয় টেকনেশিয়ান, যন্ত্রপাতি ও ডাক্তার নেই। ধারকরা টেকনেশিয়ান ও ডাক্তার দিয়ে চলছে তাদের কার্যক্রম। তারপরেও রোগীদের কাছ থেকে গলাকাটা ফি আদায় করছে। স্বাস্থ্য বিভাগের নির্ধারিত ফি’র কিছুই এখানে মানা হচ্ছে না। যে যার মতো করে ফি আদায় করছে।
জেলা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, পুরো জেলায় ৭১টি ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর মধ্যে লাইসেন্স বিহীন ১১টি, ২০১৮-১৯ অর্থ বছর পর্যন্ত লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি ৩৯টির ও চলতি অর্থ বছরের জুন মাসে লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২১টি’র। শুরু থেকে কখনও লাইসেন্স করেনি এমন ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মধ্যে রয়েছে মৌলভীবাজার পৌর শহরের সূর্যের হাঁসি প্যাথলজিক্যাল ল্যাব সেন্টার, শ্রীমঙ্গল পৌর শহরের হেলথ লাইন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সূর্যের হাঁসি ক্লিনিক, সেবা ডিজিটাল সার্ভিসেস, কুলাউড়া উপজেলার হেলথ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সূর্যের হাঁসি ডায়াগনস্টিক, বড়লেখা উপজেলার সুরমা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জুড়ি উপজেলার নিউ পপুলার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার, কমলগঞ্জ উপজেলার লাইফ কেয়ার ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেশন সেন্টার এবং রাজনগর উপজেলার মুন্সিবাজারের ইউনিক ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও নিলুফা ক্লিনিক এন্ড ডি’ ল্যাব। বৈধ লাইসেন্স না থাকলেও, তেমন কোনো ঝামেলা পোহাতে হয়নি তাদের। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে তাদের বাণিজ্য। মাঝে মধ্যে দু একটি নোটিশ পাঠানো ব্যতীত আর কিছুই করছে না প্রশাসন।
জানা যায়, মৌলভীবাজারের প্রাইভেট হাসপাতালের মালিক ও ডাক্তারদের সাথে সমন্বয় রয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকদের। রোগী প্রতি তাদেরকে দেয়া হয় বড় অংকের কমিশন। আবার কিছু কিছু ডাক্তার ও প্রাইভেট হাসপাতালের মালিকরা নির্ধারিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারের রিপোর্ট না হলে এটা হাতে নেননি। এ নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে রোগীদের। পূণরায় টাকা খরচ করে তাদের ফরমায়েশি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টেস্ট করাতে হয়।
এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ তউহীদ আহমদ বলেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টার গুলোকে লাইসেন্স ও নবায়নের আওতায় নিয়ে আসার জন্য কাজ চলছে। বিভিন্ন দিক থেকে তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করছি। সরকারও এই বিষয়ে অনেক গুরুত্ব দিচ্ছে। ধারাবাহিক প্রক্রিয়ায় নবায়ন না হলে কিছু দিনের মধ্যে এগুলো বন্ধ করা হবে।