স্টাফ রিপোর্টারঃ মৌলভীবাজারে যত্রতত্র লাইসেন্সবিহীন অরক্ষিত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। মাননির্ণয় ছাড়াই প্রতিনিয়ত এসব সিলিন্ডার জেলার প্রতিটি গ্রামে ব্যবহার হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো প্রকার অনুমোদন ছাড়াই জেলার ৬৭ ইউনিয়নের শতাধিক হাটবাজারে দেদারছে গ্যাস সিলিন্ডার বেচা-কেনা চলছে। গ্যাস সিলিন্ডার থেকে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন জেলাবাসী। এদিকে দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন স্থানে সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর মৌলভীবাজারের বিভিন্ন স্থানে সিলিন্ডার বিক্রি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু প্রশাসন বিষয়টি দেখেও না দেখার বান করছে। অথচ আবাসিক বাসা বাড়িতে গ্যাস লাইন সংযোগ বন্ধ থাকায় প্রতিনিয়ত এর চাহিদাও বাড়ছে। কিন্তু এটা বিক্রি ও বিপননের ক্ষেত্রে কোনো আইনই মানা হচ্ছে না। বিস্ফোরক আইন ১৮৮৪-এর অধীনে গ্যাস সিলিন্ডার বিধিমালা ২০০৪-এর ৬৯ ধারা অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া অনধিক ১০টি গ্যাসপূর্ণ সিলেন্ডার মজুদ করা যাবে। তবে বিধির ৭০ ধারা অনুযায়ী এসব সিলেন্ডার মজুদ করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি এবং আগুন নিয়ন্ত্রক সরঞ্জাম মজুদ রাখার কথা বলা হয়েছে। সিলিন্ডার গ্যাস স্থাপনা প্রাঙ্গণে দিয়াশলাই বা আগুন লাগতে পারে এমন কোনো বস্তু বা সরঞ্জাম রাখা যাবে না। মজুদ করা স্থানের কাছাকাছি আলো বা তাপের উৎস থাকা যাবে না। এসব আইনের তোয়াক্কা না করে মৌলভীবাজারে চা-দোকান থেকে শুরু করে ভ্যারাইটিজ স্টোরেও পাওয়া যায় সিলিন্ডার গ্যাসের বোতল। অন্য ১০টি পণ্যের মতো এটিও বিক্রি হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা যায়, বিস্ফোরক অধিদফতর গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির জন্য কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে বিক্রয় ও বিপণন লাইসেন্স প্রদান করলেও সাব-ডিলারের নামে এসব প্রতিষ্ঠান বাজারে মুদি মালের মতো গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছে। ফায়ার সার্ভিস কর্তৃক উপজেলার এসব গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রয় প্রতিষ্ঠান মনিটরিং করার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। অভিযোগ রয়েছে অসাধু গুটিকয়েক কর্মকর্তা উৎকোচের বিনিময়ে এগুলো দেখেও না দেখার বান করছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মৌলভীবাজর পৌর শহরের বড়হাট, হিলালপুর, শাহবন্দর, শ্রীমঙ্গল রোড, জগন্নাতপুর, মোকামবাজার, গিয়াসনগর বাজার, ভৈরবগঞ্জ বাজার, কলেজ গেইট, কোর্ট এলাকা, আব্দুল মুনিম চক্ষু হাসপাতালের সামনে, প্রেসক্লাব চত্বর, পুরাতন হাসপাতাল রোড, শাহ মোস্তফা রোড, শমসেরনগর রোড, শেরপুর এলাকা, সরকারবাজার, চাঁদনীঘাট সহ জেলার কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, রাজনগর, কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন বাজারের সরকারি নীতিমালাকে তোয়াক্কা না করে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার দেদার বিক্রি করা হচ্ছে। যে যার মতো করে বিক্রি করছে। দোকানের সামনে এমনকি ফুটপাথে সিলিন্ডার ফেলে রেখে এ ব্যবসা নির্বিগ্নে পরিচালনা করছেন ব্যবসায়ীরা। মুদি দোকান, হার্ডওয়ারের দোকান, ফ্লেক্সিলোডের দোকান, মেশিনারি দোকান, সারের ডিলার, ট্রাভেলস, কাপড়ের দোকান, মোবাইলের দোকান এবং চা-দোকানেও পাওয়া যাচ্ছে এ সিলেন্ডার গ্যাস। এসব দোকানে ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র রাখার কথা থাকলেও তা নেই অধিকাংশ দোকানে। আবার কোনো কোনো দোকানে অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র থাকলেও তা অকেজো ও মেয়াদোত্তীর্ণ। কুলাউড়া উপজেলা ফায়ার ষ্টেশনের ম্যানেজার বেলায়েত হোসেন বলেন, আমরা পরিদর্শন করে দেখেছি দুই তৃতীয়াংশ দোকান আমাদের কাছ থেকে ছাড়পত্র নেয়নি। অনেক ব্যবসায়ীরা এটা কি বুঝেও না। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করেছি। আগামী ১৮ তারিখের সভায় এটা নিয়ে আলোচনা করব। এ বিষয়ে জেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল হারুন পাশা বলেন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে কেউ অনুমোধন নিয়ে আমাদের অফিসে আসলে আমরা ফায়ার সেফটি দেই। যদি কোনো ব্যবসায়ী আপনাদের কাছে না আসেন তাহলে মনিটরিং করা আপনাদের দায়িত্ব কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। কতটি দোকানে ফায়ার সেফটি আছে এমন পরিসংখ্যানও নেই উনার কার্যালয়ে
Post Views:
0