স্টাফ রিপোর্টারঃ অরণ্যক নির্জ্জনতা ভর করেছে সাবেক প্রধান বিচারপতি এস.কে সিংহার কমলগঞ্জস্থ গ্রামের বাড়ীতে। পথচারীরা কৌতুহল বশত: বাড়ীটির প্রতি বারেক দৃষ্টিপাত করে চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। অথচ প্রান্তিক জনপদের এই বাড়ীটি প্রাণ চাঞ্চল্যে এবং লোক পদচারণায় ছিলো মুখরিত। কিন্তু এখানেও কি “এ্যা ব্রোকেন ড্রীম” এর ছায়া অব্যক্ত গুঞ্জরণ তুলছে? এককালীন সিলেট বারের দ্বিতীয় সারির উকিল সুরেন্দ কুমার সিনহা নিজস্ব ক্যারিশমা বলে ১৯৯৯ সনে হাইকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভের পর তার গ্রামের বাড়ীটি চলে আসে লাইমলাইটে। শুধু এই বাড়ীটির সুবাদে গ্রামে বৈদ্যুতিক সংযোগের পাশাপাশি কাঁচা রাস্তা পাঁকা হয়েছিল দ্রুত গতিতে। বিচার পতির আসনে উপবিষ্ট হওয়ার পর সিনহা ঘন ঘন বাড়ীতে আসতেন। প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা, জেলা জজশীপের বিচারক ছাড়াও জেলার প্রভাবশালীরা ছুটে আসতেন এই বাড়ীতে। প্রধান বিচারপতি পদে অধিষ্টিত হবার পর সিনহার বাড়ীটির গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। পুলিশ প্রটোকলের সদস্যরা দিবারাত্রি নিয়োজিত থাকতেন বাড়ীটির পাহারা দেয়ার জন্য। বাড়ীর সম্মুখে থাকতো গাড়ীর লম্বা লাইন। এখন বিরাজ করছে উল্টা দশা। একাধিক সাক্ষাৎকারে এস কে সিনহা বলেছিলেন- অবসর গ্রহণের পর সরাসরি ছুটে আসবেন গ্রামের বাড়ীতে। প্রতিষ্ঠা করবেন বড় মাপের লাইব্রেরী। পাশাপাশি একটি হর্টিকালচারাল গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করে এলাকাকে আলোকিত করবেন। কিন্তু সকলই গরলভেল। তীর্য্যক বক্তব্য, ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ঘোষনা, সতীর্থ বিচারপতিদের নিকট অস্পৃশ্য গণ্য, চিকিৎসার নামে দেশত্যাগ এবং বিদেশে গমণ করে পদত্যাগ শেষে “এব্রোকেন ড্রীম” শিরোনামের কথিত ফরমায়েসী বই লিখে প্রধান বিচারপতি এস.কে সিনহা কেবল ঢেঁউয়ের পর ঢেঁউ তুলেছিলেন। সর্ব শেষে দুদকের মামলায় মানি লম্বারিং এর আসামী হয়ে আরেক দফা ঢেঁউ তুলেছেন। এই ঢেউয়ের বিপরীতে সাঁতার কেঁটে সিনহার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কি কোন দিন সম্ভব হবে? এ প্রশ্নের জবাব খুঁজে পাচ্ছেন না গ্রামের লোকজন সহ প্রতিবেশীরা। এ ক্ষেত্রে বাউল আব্দুল করিমের গান “গেলো বন্ধু আর আইলো না” শেষমেষ কি আওয়াজ তুলবে? প্রতিকূল পরিস্থিতির আলোকে দেশান্তরী অবস্থায় এস কে সিনহা যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি এলাকায় বসবাসরত তার সহোদর অনন্ত সিনহার বাসাকেই কি তবে স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে বেছে নিয়েছেন?
Post Views:
0