কুলাউড়া প্রতিনিধি:
কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথের কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের রামপাশা এলাকায় রেলওয়ের একটি পরিত্যক্ত কোয়ার্টারের ভেতর থেকে কে বা কারা সম্প্রতি ৯টি বড় বড় পুরাতন আমগাছ কেটে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় রেলওয়ের এক কর্মকর্তা জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ, রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কিছুই জানে না।
স্থানীয় ও রেলওয়ে সূত্র জানায়, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথে এক যুগের বেশি সময় ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ। সম্প্রতি বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের যৌথ অর্থায়নে রেলপথটির শাহবাজপুর অংশে পুণর্বাসন কাজ শুরু হয়। রামপাশা এলাকায় রেলপথের পাশে বেশ কিছু জায়গা জুড়ে পুরোনো টিনশেডের আধাপাকা একটি কোয়ার্টার আছে। এক সময় রেলওয়ের কর্মচারীরা সেখানে থাকতেন। পরবর্তীতে এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থার মধ্যেও কয়েকটি পরিবার সেখানে বাস করছে। তিন-চার দিন আগে কিছু লোক কোয়ার্টারের ভেতর থেকে ২০ থেকে ২৫ বছর বয়সী বড় বড় ৯য়টি আমগাছ কেটে নিয়ে যায়।
গত মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দিকে দেখা যায়, কেটে নেওয়া গাছের গোড়াগুলো ডালপালা ও মাটি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। ওই গাছগুলো ৪ থেকে ৫ ফুট বেড়ের হবে। সেখানে আরও সাতটি আম, দুটি তেঁতুল ও দুটি তালগাছ রয়েছে। কোয়ার্টারে এলাকার পাঁচটি দরিদ্র পরিবার থাকে।
সেখানে বসবাসকারী একটি পরিবারের সদস্য আবদুল করিম বলেন, তাঁর বাবা আবদুল মনাফ রেলের কর্মচারী ছিলেন। তিনি বেঁচে নেই। ১০-১২ বছর ধরে তাঁরা এখানে আছেন। গাছ কাটার বিষয়ে জানতে চাইলে করিম বলেন, ঘটনার দিন তিনিসহ এখানকার সব পুরুষ সদস্য কাজে বাইরে ছিলেন। এ সময় কিছু লোক এসে ঢুকে করাত দিয়ে আমগাছগুলো কেটে নিয়ে যান।
আরেক পরিবারের নারী সদস্য সুমি বেগম বলেন, গাছ কাটতে আসা লোকদের তিনি চিনতে পারেননি। সরকারি লোকজন ভেবে তাঁদের বাধা দেননি।
জয়চন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নং ওয়ার্ডের সদস্য লোকমান মিয়া মুঠোফোনে বলেন, ‘কোয়ার্টারের কিছু গাছ আতা সাহেব (রামপাশা এলাকার বাসিন্দা ও রেলওয়ের আখাউড়া-সিলেট রেলপথের ট্রাফিক পরিদর্শক আতাউর রহমানের ডাকনাম) কেটে নিয়েছেন বলে আশপাশের লোকজনের কাছ থেকে শুনেছি। সত্য কি মিথ্যা জানিনা। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে এটা করেছেন কি না তা-ও জানি না।
এব্যাপারে আতাউর রহমান বলেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে জ্বালানি কাঠ হিসেবে ব্যবহারের জন্য কোয়ার্টারের পাশ থেকে একটি গাছ কেটে নিয়েছি। অন্য গাছগুলোর বিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
রেলপথটি দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন রেলওয়ের কুলাউড়া সেকশনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পূর্ত) জুয়েল আহমদ। তিনি বলেন, ‘গাছ কাটার বিষয়ে আমি অবগত নই। খোঁজ নিয়ে দেখব।’ কোয়ার্টারটি বর্তমানে কী অবস্থায় আছে এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অনেক দিন ধরে ওই পথে ট্রেন চলে না। তাই, খোঁজ নেওয়া সম্ভব হয় না।
কুলাউড়ার জয়চন্ডীতে রেলওয়ে কোয়ার্টারের গাছ কর্তন, জানে না কর্তৃপক্ষ!
